১০,০০০ কিমি পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল থাকার দাবি ইরানের, আমেরিকার চাপ বাড়ল?ইরান দাবি করেছে যে তাদের কাছে একটি নতুন ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (ICBM) আছে। এই মিসাইলটি ১০,০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। যদি এই দাবি সত্যি হয়, তবে এটি ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে পৌঁছতে পারে। ৭ নভেম্বর ইরানি সংবাদ সংস্থা তাসনিম এই খবরটি জানিয়েছে। এই তথ্য এক্স-রেতেও শেয়ার করা হয়েছে, তবে পশ্চিমা দেশগুলি এখনও এটি নিশ্চিত করেনি।
সংবাদমাধ্যমের ভিডিওতে মিসাইলের সাইলো, মোবাইল লঞ্চার এবং উৎক্ষেপণের ফুটেজ দেখানো হয়েছে, যার সঙ্গে ইরানি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (IRGC) এর মন্তব্যও রয়েছে। ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে যে মিসাইসটির উন্নয়ন সম্পূর্ণ হয়েছে, তবে স্যাটেলাইট ছবি বা ১০,০০০ কিলোমিটার পরীক্ষামূলক লঞ্চের ভিডিওর মতো কোনও প্রমাণ নেই। এর আগে ইরানের হাতে সর্বোচ্চ ২,০০০ কিলোমিটার পাল্লার মিসাইল ছিল। এই পাল্লায় উপসাগরীয় দেশ, ইজরায়েল এবং পূর্ব ইউরোপ অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ১০,০০০ কিলোমিটার পাল্লায় লক্ষ্যবস্তু একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। যদি এই মিসাইলটি কাজ করে, তাহলে ইরান প্রথমবারের মতো মার্কিন পূর্ব উপকূল - যেমন ওয়াশিংটন, ডিসি এবং নিউ ইয়র্ক - লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।
এটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে?
ইরানের বর্তমান ক্ষেপণাস্ত্র, যেমন খোররামশাহর-৪, মাত্র ২০০০-৩,০০০ কিলোমিটার পাল্লার। ১০,০০০ কিলোমিটারের জন্য নতুন প্রযুক্তি প্রয়োজন। অনেক বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে ইরানের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ যান প্রোগ্রাম (যেমন সিমোর্গ এবং কাসেদ) এই ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। এগুলি মহাকাশ অভিযানের জন্য তৈরি, তবে ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি রোড-মোবাইল লঞ্চারে মাউন্ট করা যেতে পারে, যা লুকানো সহজ। ইরান সম্প্রতি সলিড ফুয়েল মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে। কারণ এগুলি দ্রুত উৎক্ষেপণ করা যায়। কিন্তু এত দীর্ঘ পাল্লার জন্য সলিড ফুয়েল তৈরি করা কঠিন।
এর প্রভাব কী হবে?
মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (GMD) বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার মতো ছোট হুমকির জন্য তৈরি করা হয়েছে। ইরানি ICBM থেকে রক্ষা করার জন্য আলাস্কা এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় ইন্টারসেপ্টর বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। NORAD এবং Aegis সিস্টেমগুলিকে শক্তিশালী করতে হবে। ইউরোপীয় দেশগুলিকে তাদের সতর্কতা ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় আরও অবদান রাখতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের আধিপত্য বৃদ্ধি পাবে। ইজরায়েল এবং উপসাগরীয় দেশগুলির উপর চাপ বৃদ্ধি পাবে।