মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। তেহরানের পরমাণু কেন্দ্রের হামলার পর ইজরায়েলকে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইরান। সেই মতো পাল্টা হামলা চালাল আয়াতোল্লা খামেনেইয়ের দেশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইজরায়েলকে জবাব দিল ইরান। এবার জ্বলল তেল আভিভ। একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ইজরায়েলের রাজধানী শহর। ইজরায়েলের অপারেশন 'রাইজিং লায়ন'-এর জবাবে ইরান নিজের সেনা অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিভিয়র পানিশমেন্ট’ অর্থাৎ ‘কঠোর শাস্তি’।
শুক্রবার রাতেই ইজরায়েলে বড়সড় মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের প্রায় ডজনখানেক এলাকায় শতাধিক ড্রোন নিক্ষেপ করেছে ইরান। হামলা চালানো হয়েছে ব্যালিস্টিক মিসাইল নিয়ে। বহু সাধারণ মানুষের আহত হয়েছেন এই মিসাইল হামলায়। কারণ বেশিরভাগ মিসাইলই পড়েছে তেল আভিভের জনবসতিপূর্ণ এলাকায়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইজরায়েলের কমপক্ষে আট শহরে আছড়ে পড়েছে মিসাইল। তেল আভিভের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি বহুতল আবাসন মিসাইল হামলার শিকার হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে ধূলিসাৎ আবাসনে একাংশ। বাকি অংশ জ্বলে উঠেছে দাউ দাউ করে। গোটা ইজরায়েল জুড়ে বাজছে যুদ্ধের সাইরেন। এই হামলার জবাবে নেতানিয়াহু প্রশাসনের হুঁশিয়ারি, ‘সাধারণ নাগরিকদের উপর মিসাইল ছুড়ে রেড লাইন পার করে ফেলেছে ইরান। এর চূড়ান্ত ফল পাবে তারা।’
প্রথম দফার হামলার ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই দ্বিতীয়বার প্রত্যাঘাত করে ইরান। ইজরায়েলের তেল আভিভ আর জেরুজালেম শহর ছিল ইরানের নিশানায়। ধেয়ে আসে ঝাঁক ঝাঁক ব্যালেস্টিক মিসাইল। দ্বিতীয় দফার অভিযানকে ইরান নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩'।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘকে ইরানের অ্যাম্বাসেডর জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা আগে ইরানে ছোড়া ইজরায়েলের মিসাইল ও ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন ইরানের উচ্চপদস্থ সেনা কর্তাও। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩২০। অন্যদিকে, ইজ়রায়েলের দাবি, ইরানের প্রত্যাঘাতে ৩৪ জন নাগরিক আহত হয়েছেন। তার মধ্যে এক মহিলা নাগরিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ইরানের সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তেহরানে ইজরায়েলের দু'টি জেট বিমানকে নামানো হয়েছে এবং একজন মহিলা পাইলটকে আটক করা হয়েছে। এই খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইজরায়েল। এই দাবিটি ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেল থেকেও শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টটিতে বলা হয়েছে, ‘ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী দু'টি ইজরায়েলি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি শত্রু ড্রোনকেও ধ্বংস করা হয়েছে।’ কিন্তু ইজরায়েলের তরফে এই খবরকে অসত্য বলা হয়েছে।