ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে সকলে পাকিস্তানকেই সমর্থন করবেন তো? ঘরভর্তি অনুগামীদের দিকে এই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন ইসলামাবাদের লাল মসজিদের 'বিতর্কিত' ধর্মগুরু মৌলানা আবদুল আজিজ গাজি। তাঁর প্রশ্নে টুঁ শব্দ করলেন না কেউ।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে অশান্তির আবহ চলছে। যে কোনও মুহূর্তে ভারত হামলা চালাতে পারে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। এই নিয়ে জোর চর্চা চলছে সে দেশের ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানগুলিতেও।
তেমনই একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অনুগামী এবং উপস্থিত পড়ুয়াদের উদ্দেশে লাল মসজিদের ধর্মগুরু প্রশ্ন করেন, 'আমি আপনাদের একটি কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই। বলুন তো, যদি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ লাগে তবে আপনাদের মধ্য কতজন পাকিস্তানকে সমর্থন করবেন?' দর্শকদের মধ্যে কেউ কোনও উত্তর দেননি। কারও মুখ দিয়ে একটি শব্দও উচ্চারিত হয়নি। সকলকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে গাজি বলেন, 'আমি এর অর্থ বুঝতে পারলাম।'
দর্শকদের মনোভাব বুঝতে পেরে পাকিস্তান প্রশাসনের নিন্দা করতে শুরু করেন 'বিতর্কিত' এই ধর্মগুরু। তিনি বলেন, 'পাকিস্তানের সিস্টেমে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এই সিস্টেমটা নিষ্ঠুর, ব্যর্থ।' বালোচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়াতে অত্যাচারের উদাহরণও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, 'বালোচিস্তানে কী হয়েছে? পাকিস্তানে কী হয়েছে? এগুলো ভয়াবহ অত্যাচরের নমুনা। রাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের উপরই বোমা মেরেছে।' গত ২ মে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল বলে খবর। পাক সোশ্যাল মিডিয়ায় হু হু করে ভাইরাল হয় এই অংশ।
পাকিস্তানি নাগরিকদের মধ্যেই রাষ্ট্র সম্পর্কে কী ধারণা তৈরি হয়েছে, তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট। ভারত সম্পর্কে পাক নেতৃত্বের ভূমিকাও সমালোচনা করছেন অধিকাংশ। লাল মসজিদ, যেটিকে উগ্রপন্থী মনোভাবাপন্নদের আঁতুড়ঘর হিসেবে দেখা হত, সেখানেই চিড় ধরায় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ লাগলে নাগরিকরা আদৌ রাষ্ট্রকে সমর্থন করবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।
ইসলামাবাদ যে বর্তমানে কিছুটা হলেও ঢোঁক গিলছে, তা সহজেই অনুমেয়। যদিও মুখেন মারিতং জগৎ চলছেই নেতৃত্বের। ইতিমধ্যেই ৪৫০ কিলোগ্রামের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার দাবি করেছে পাক সরকার। ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবরকম শক্তি প্রয়োগ করে দেওয়ার কথাও জানাচ্ছেন শীর্ষনেতৃত্ব।