
চিনের বিরুদ্ধে চলা মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের প্রস্তুতির মধ্যে নতুন করে লাল ফৌজের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জাপানের সামরিক মহড়া।Japanese SDF Drill: চিনের বিরুদ্ধে চলা মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের প্রস্তুতির মধ্যে নতুন করে লাল ফৌজের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জাপানের সামরিক মহড়া। গাজায় হামাস-ইজরায়েলের যুদ্ধের মধ্যে, জাপান ফের তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক মহড়ার সংখ্যা বৃদ্ধি। এর পাশাপাশি জাপানের সংবিধানের অধীনে নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত আক্রমণাত্মক অস্ত্রের ব্যবহার ও মহড়া বৃদ্ধি করেছে জাপানের সেলফ-ডিফেন্স ফোর্স (Japanese SDF)।
রবিবার, জাপানের সামরিক বাহিনী (Japanese SDF) 05JX মনোনীত ১১ দিনের সামরিক মহড়া শেষ করেছে। চূড়ান্ত দিনে মহড়ার মধ্যে ছিল টোকুনোশিমাতে নৌসেনার উভচর অবতরণ এবং আক্রমণ যেটি পূর্ব চিন সাগরের রিউকিউ দ্বীপ শৃঙ্খলের একটি দ্বীপে হয়েছিল। এই সামরিক মহড়ায়, জাপানের সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন শাখা অংশ নিয়েছিল।
টোকুনোশিমার মহড়ায় অংশ নেওয়া নৌসেনারা অ্যামফিবিয়াস ব়্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট ব্রিগেড (ARDB) এর অন্তর্গত, যা ২০১৮ সালে গঠিত হয়েছিল। এআরডিবি কমান্ডার শিঙ্গো নাশিনোকি গত সপ্তাহে ইরিসুনা-জিমাতে পৃথক প্রশিক্ষণ কৌশলের সময় বলেন: “জাপানের চারপাশে জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করার মতো পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে পূর্ব চিন সাগর, দক্ষিণ চিন সাগর এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে চিন ও রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সামরিক তৎপরতার কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

অ্যামফিবিয়াস ব়্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট ব্রিগেড (ARDB) হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের প্রথম নৌবাহিনী। টোকিও এই অর্থবছরে একটি তৃতীয় রেজিমেন্ট যোগ করে ব্রিগেড সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে, যার বাজেট গত ডিসেম্বরে ঘোষিত সামরিক বাজেটের দ্বিগুণ। যুদ্ধের ক্ষেত্রে এর প্রাথমিক কাজ হবে পূর্ব ও দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা নিয়ন্ত্রিত জাপানি দ্বীপগুলিকে দখল করা। নাশিনোকির বিবৃতি অনুযায়ী, জাপানের SDF গোটা অঞ্চলজুড়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি যা জাপানের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত।
তবে তাইওয়ানের দিকে প্রসারিত জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম দ্বীপের শৃঙ্খল বরাবর টোকুনোশিমাতে কোনও প্রবাল প্রাচীর নেই যা সামরিক অভিযানকে আরও কঠিন করে তুলবে। ডিসেম্বরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা প্রতিরক্ষা ব্যয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশের সবচেয়ে বড় সামরিক বাহিনী তৈরি করেন। এর পরই জাপানে সামরিক মহড়ার পরিধি এবং গতি আগামী কয়েক বছরে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, চিন যদি তার প্রতিবেশী তাইওয়ানে আক্রমণ করে, তবে তার ফল ভাল হবে না।
গত ৪ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত, জাপানি মেরিটাইম সেলফ-ডিফেন্স ফোর্স (MSDF) এবং মার্কিন নৌবাহিনী ফিলিপিন সাগরে রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণে একটি বড়সড় যৌথ মহড়া করে, যাতে দুটি মার্কিন বিমানবাহী জাহাজও ছিল। চিন সাগরে জাপানের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিরোধ গড়ার প্রস্তুত হিসাবেই দেখছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।