উত্তর কোরিয়ার কঠোর পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পরিবর্তনের হাওয়া? খুব শীঘ্রই চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কিম জং উন। সূত্রের খবর, নিজের মেয়ে কিম জু এ কে উত্তর কোরিয়ার উত্তরসূরি ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন তিনি। বয়স মাত্র ১২, ১৩ বছর। অথচ ইতিমধ্যেই তাকে ‘সম্মানীয়া কন্যা’ বলে প্রচার শুরু করেছে সরকারি সংবাদমাধ্যম। ডাকটিকিটেও এসেছে তার ছবি।
কিমের ‘বেটি বাড়াও’ নীতি?
ভারতে মেয়েদের শিক্ষা ও সুরক্ষার্থে ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’ খুব পরিচিত ক্যাম্পেইন। এবার কি কিমের মনেও সেই ভাবনা? উত্তর কোরিয়ার মতো রক্ষণশীল দেশে মেয়েকে উত্তরসূরি করে সামনে আনা নিঃসন্দেহে বড় পদক্ষেপ। এমন এক সমাজে, যেখানে এত দিন ক্ষমতা কেবল পুরুষ নেতাদের হাতেই সীমাবদ্ধ ছিল, সেখানে কিম জং উন এই সিদ্ধান্ত নিলে পুরনো প্রথা ভাঙতে পারে।
কিম জু এ ভাইরাল
২০২২ সালে এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সময় প্রথম প্রকাশ্যে আসেন কিম জু এ। তারপর থেকে সামরিক কুচকাওয়াজ, কূটনৈতিক বৈঠক, এমনকি নতুন রিসর্টের উদ্বোধনেও বাবার পাশে দেখা গিয়েছে তাকে। সম্প্রতি বাবার সঙ্গে চিন সফরে গিয়েছিলেন তিনি। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, ওই সফরেই কিম জু এ কে সম্ভাব্য উত্তরসূরির মতোই প্রোজেক্ট করা হয়।
উত্তর কোরিয়ার প্রেক্ষাপট
উত্তর কোরিয়াতে মূলত পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। পরিবারে সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকে পুরুষের হাতে। এখানে কনফুসিয়াসের দর্শন নীতি মেনে চলা হয়। সেই প্রেক্ষিতে এক কিশোরীকে ক্ষমতার উত্তরসূরি হিসেবে তুলে ধরা একেবারেই ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ।
বিতর্ক ও সংশয়ের মেঘ
তবে সমালোচকরা বলছেন, জু এ-র বয়স ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। বরং সেদিক দিয়ে দেখলে কিমের বোন কিম ইয়ো জং বেশ পরিচিত মুখ।
এখনও পর্যন্ত জু এ-র হাতে কোনও আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেই। ফলে এই পদক্ষেপ কতটা বাস্তবসম্মত, তাই নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পরিবারের মধ্যে অভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ঠেকাতে এবং নিজের বংশের হাতে ক্ষমতা রাখতেই এত অল্প বয়সে মেয়েকে সামনে নিয়ে আসছেন কিম। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, ভবিষ্যতও কিম পরিবারেই।
প্রশ্ন একটাই, সুুপ্রিম লিডারের এই ‘বেটি বাড়াও’ কি উত্তর কোরিয়ার পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারবে? নাকি এটাও কেবল কিম পরিবারের ক্ষমতা ধরে রাখার আরও এক কৌশল মাত্র?