
পৃথিবীর চারপাশে শুধু জল আর জমি নেই। নীচে টেকটোনিক প্লেটও রয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীর উপরের অংশ যা কেঁপে ওঠে। একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এক প্লেট অন্য প্লেটকে চাপ দেয়। এ কারণে ভূমিকম্প হয়। সুনামি আসে। এই প্রক্রিয়া ১০০ কোটি বছর ধরে অবিরাম চলছে। এই টেকটোনিক প্লেটগুলির স্থানান্তরের কারণে, তাদের উপরের ভূমি অর্থাৎ আমাদের মহাদেশগুলি ভেঙে, বিক্ষিপ্ত এবং আবার গঠিত হয়েছে। কিছু সময় পর এই পৃথক মহাদেশগুলো আবার একত্রিত হয়ে সুপারমহাদেশ গঠন করবে। কিন্তু আপনি যদি মাত্র ৪০ সেকেন্ডে ১০০ কোটি বছরের টেকটোনিক প্লেটের গতিবিধি দেখতে পান, তাহলে কেমন হবে?
টেকটোনিক প্লেটগুলো পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে চলতে থাকে। এই টেকটোনিক প্লেট আসলে কী? টেকটোনিক প্লেট হল পৃথিবীর অভ্যন্তরে থাকা পাথরের বড় স্ল্যাব। তাদের চলাচলের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হয়। তরঙ্গ প্যাটার্ন পরিবর্তিত হয়। প্রাণীদের গতিবিধি পরিবর্তন হয়। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। ধাতু তৈরি করা হয়। অর্থাৎ শুধুমাত্র টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ার কারণেই ভূমিকম্প হয় না। এটি পৃথিবীতে একটি লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম। যা প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে নতুন প্রাণ দেয়। এমনকি তার উপর নতুন জীবনও জন্ম নেয়। সেটা ভূপৃষ্ঠে হোক বা সমুদ্রে।
ইউনিভার্সিটি অব সিডনির পিএইচডি গবেষক ও ভূ-বিজ্ঞানী মাইকেল টেটলি বলেন, প্রথমবারের মতো টেকটোনিক প্লেটের গতিবিধির একটি কম্পিউটার মডেল তৈরি করা হয়েছে। এটি সমস্ত ভৌগলিক সীমানা কভার করে। মানুষের গণিত অনুসারে, পৃথিবীতে যে কোনও বড় জিনিস প্রতি বছর সেন্টিমিটার হারে চলে। কিন্তু এখানে ভিডিওটি দেখলেই জানা যাবে যে আমাদের মহাদেশগুলো পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। আজ, অ্যান্টার্কটিকা দক্ষিণ মেরুতে উপস্থিত, যেখানে কেউ বাস করে না। তা কোন সময়ে নিরক্ষরেখায় ছিল।
Watch 1 Billion Years of Shifting Tectonic Plates in 40 Mesmerizing Seconds https://t.co/jcZM9PahT5
— ScienceAlert (@ScienceAlert) October 10, 2022
যখনই এই টেকটোনিক প্লেটগুলো নড়ে। যখন তাদের উপরে ভূমি বা দেশ ও মহাদেশগুলিও সরে যায়। তাদের চারপাশের জিনিসগুলিও নড়াচড়া করে। তখন জানা যায়, এই মহাদেশগুলো অন্য মহাদেশের পুরনো আত্মীয়। সেখান থেকে তারা ভেঙে পড়েছে। এই টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ার এই ভিডিওর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন ভবিষ্যতে পৃথিবীতে কোন স্থান বাসযোগ্য থাকবে। যে মহাদেশটি এখন বিষুবরেখায় রয়েছে, সেটি কি আগামী সময়ে উত্তর বা দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছে যাবে? আমেরিকা এশিয়ার দিকে যাবে নাকি আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়ার দিকে যাবে।
মাইকেলের সঙ্গে সাবিন জাহিরোভিচ একসাথে নমিলে টেকটোনিক প্লেটের স্থানান্তর এবং মহাদেশের বিচ্ছিন্নতার এই ভিডিওটি তৈরি করেছেন। যেখানে মাত্র ৪০ সেকেন্ডে ১০০ কোটি বছরের গতিবিধি দেখা যাবে।