Donald Trump Narendra Modi: কেন ট্রাম্পের ফোন ৪ বার রিজেক্ট করলেন মোদী? নেপথ্যে উঠে আসছে 'দ্বিচারিতা'

বারবার, লাগাতার ফোন করে গিয়েছেন 'বন্ধু' নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেন? কেন আচমকা বন্ধুত্ব ভেঙে চৌচির হল? সেই ব্যাখ্যাই দিলেব মার্কিন এক্সপার্ট।

Advertisement
কেন ট্রাম্পের ফোন ধরেননি মোদী? ব্যাখ্যা দিলেন খোদ মার্কিন এক্সপার্টনরেন্দ্র মোদী ডোনাল্ড ট্রাম্প
হাইলাইটস
  • নরেন্দ্র মোদী ট্রাম্পের ফোন ধরেননি কেন?
  • অসন্তোষ না সতর্কতা?
  • ব্যাখ্যা করলেন মার্কিন এক্সপার্ট

জার্মান সংবাদপত্র ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালগেমাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন শোরগোল ফেলে দিয়েছে বিশ্বে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদীকে ৪ বার ফোন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ফোন তোলেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সংবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এমন কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে, মোদী অপমানিত বোধ করেছেন।’ তবে জার্মান সংবাদপত্রের এই দাবি নিয়ে এখনও পর্যন্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে কেন মোদী ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে রাজি হননি, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন এক মার্কিন বিশেষজ্ঞ। 

জার্মানির সংবাদপত্রে প্রতিবেদনে বর্তমান ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক এবং 'অপারেশন সিঁদুর' সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়গুলি নিয়েও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ভারতের উপর চাপানো আমেরিকার ৫০ শতংশ ট্যারিফের উল্লেখও। 

ট্রাম্পের বুলি
জার্মান সংবাদপত্রটির প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানিয়ে তাঁকে 'মহান নেতা' বলে উল্লেখ করেন। ভারত এবং মার্কিন মুলুক একসঙ্গে যাত্রা করবে বলেও বড় বড় বুলি কপচান। কিন্তু কয়েকমাসের মধ্যেই তাঁর সুর বদলে গিয়েছে। ভারতকে 'মৃত অর্থনীতির' দেশ বলে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি ট্রাম্প। 

জার্মান সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের এই ঘন ঘন ভোলবদলে অসন্তুষ্ট। আর সে কারণেই গত সপ্তাহ থেকে ট্রাম্প তাঁকে ৪ বার ফোন করার চেষ্টা করলেও তিনি কোনও জবাব দেননি বলে দাবি ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালগেমাইনের। 

কেন ট্রাম্পের ফোন রিজেক্ট মোদীর?
জার্মান সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ট্রাম্পের ফোন না ধরা আদতে ভারতের কূটনৈতিক সতর্কতার পরিচয়। ট্রাম্প সম্প্রতি আমেরিকা এবং ভিয়েতনামের মধ্যে একটি ট্রেড ডিল ঘোষণা করেছিলেন। এই মর্মে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যেও বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু ফোনে ভিয়েতনামের নেতা টো ললামের সঙ্গে কথা বলার পর, তার অজান্তে হঠাৎই ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় চুক্তির সমস্ত তথ্য প্রকাশ করে দেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ট্রাম্পের এই জালে ফাঁসতে চান না বলেই কি তবে ফোন ধরেননি? চর্চা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। 

Advertisement

জার্মান দৈনিকের মতে, ট্রাম্প ভেবেছিলেন তাঁদের দেশের বাজারের একচেটিয়া আধিপত্য থাকবে। সেই জন্য নিজের মর্জি মতো একাধিক সিদ্ধান্তও তিনি নিয়েছিলেন। কিন্তু, মোদী তা মেনে নিতে চাইছেন না। মোদীর এই মনোভাবকে ‘তাঁর গভীর ক্ষোভ এবং সতর্ক পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

কী বলছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞ?
নিউ ইয়র্কের পলিসি এক্সপার্ট তথা ইন্ডিয়া চায়না ইনস্টিটিউটের সহ নির্দেশক মার্ক ফ্রেজিয়র বলেন, 'আমেরিকার রণনীতি কাজ করছে না। ভারতকে সঙ্গে নিয়ে চিন এবং রাশিয়াকে টাইট দেওয়ার যে পরিকল্পনা এঁটেছিলেন ট্রাম্প, তা কার্যত ভেস্তে গিয়েছে। কারণ ভারত কখনওই চিনের বিরুদ্ধে আমেরিকার কথায় ঘাড় নাড়বে না।'

গত ১৭ জুন শেষবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্টের মধ্যে ফোনে কথা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞ আরও ব্যাখ্যা করেছেন, নরেন্দ্র মোদীর ক্ষোভের কারণ খুব স্পষ্ট। ব্রাজিল ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনও দেশের উপরে ট্রাম্প প্রশাসন এত চড়া শুল্ক আরোপ করেনি, যতটা 'বন্ধু' দেশ ভারতের উপর চাপিয়েছে। সেই সঙ্গে ট্রাম্পের বারবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করাও মোটে ভাল চোখে নেয়নি ভারত সরকার। 

আবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে ওয়াকিবহাল কিছু ব্যক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার অন্যতম কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের অভাব।

 মার্কিন বাজার না হারাতে চেয়ে ট্রাম্পের শুল্ক কৌশলের সামনে নতি স্বীকার করেছে একের পর এক দেশ। কিন্তু ভারত তা করেনি। বরং ভারত, ব্রাজ়িল, চিন, রাশিয়া এবং BRICS গোষ্ঠীর অন্যান্য দেশ নিজেদের মধ্যেই বিকল্প বাজার খুঁজে নিচ্ছে। এ-ও ক্ষোভ বাড়িয়েছে ট্রাম্পের। ফলে সব মিলিয়ে 'বন্ধুত্ব' যে ভেঙে চৌচির হয়ে গিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

POST A COMMENT
Advertisement