ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনেইরোতে ব্রিকস (BRICS) শীর্ষ সম্মেলনেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে শোনা গেল পহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গ। এপ্রিল মাসে পহেলগাঁওতে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। সেই প্রসঙ্গ টেনে, রবিবার ব্রিকস-এর সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পহেলগাঁওতে যে হামলা হয় তা শুধুমাত্র ভারতের উপর নয়, এটি মানবতার উপর আঘাত।’
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জনের। এই হামলার দায় গ্রহণ করে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’। ওই হামলার পিছনে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীদের হাত আছে তা সামনে আসার পরেই ’অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালায় ভারত। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি।
এই নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আজারবাইজানে ইকোনমিক কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পরে পাকিস্তানের প্রতি ভারতের অকারণে বেপরোয়া শত্রুতা করা ছিল আঞ্চলিক শান্তি নষ্ট করার আরেকটি চেষ্টা।’ এরই পাল্টা ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনার কথা তুলে ধরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মানবতার সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সন্ত্রাসবাদ। পহেলগাঁওতে একটি অমানবিক এবং কাপুরুষোচিত জঙ্গি হামলা হয়েছে। এটি মানবতার উপর আঘাত।’ একইসঙ্গে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করার জন্য ব্রিকস দেশগুলিকে একটি স্পষ্ট এবং ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করার কথাও বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের মতো বিষয়ে দুমুখো নীতির কোনও স্থান নেই। যদি কোনও দেশ সন্ত্রাসবাদকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন করে, তবে তাকে অবশ্যই এর মূল্য চোকাতে হবে।’ তাঁর মতে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে একেবারেই দ্বিধা করা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং এর সমর্থকদের একই মাপকাঠিতে বিবেচনা করতে পারি না। ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থে সন্ত্রাসবাদকে যে কোনও নীরব সমর্থন বা অনুমোদন কোনও মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ‘শান্তি ও নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক শাসন সংস্কার’ শীর্ষক অধিবেশনে, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের প্রতি ভারতের অবস্থানের কথাও স্পষ্ট করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ব্রিকসের তরফেও পহেলগাঁওতে হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এরই সঙ্গে সব রকমের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার অঙ্গীকারও করেছেন রাষ্ট্রপ্রধানরা।