প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গ। শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি সহ ডুয়ার্স জুড়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলছে। তবে কেবল উত্তরবঙ্গ নয়, প্রতিবেশী দেশ নেপালও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পূর্ব নেপালের ইলামে বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
রবিবার সকাল পর্যন্ত, সূর্যোদয় পৌরসভায় ভূমিধসে কমপক্ষে পাঁচজন, মাংসেবুং পৌরসভায় তিনজন এবং ইলাম পৌরসভায় ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসএসপি পোখরেল ফোনে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, এই দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন চলছে। তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত তাদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক বিবরণ রয়েছে।
রবিবার সকালে উদ্ধার অভিযান শুরু হলেও এলাকায় বৃষ্টির কারণে ত্রাণ প্রচেষ্টা বারবার ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সুরক্ষা এজেন্সিগুলিকে(নেপাল সেনাবাহিনী, সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং নেপাল পুলিশ) মোতায়েন করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে, আরও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে, নদীগুলি উত্তাল। কাঠমান্ডু উপত্যকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
নদীর তীরে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে
শনিবার নিরাপত্তা সংস্থাগুলি উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সমস্ত প্রধান নদীর তীরবর্তী বসতিগুলিতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। তারা ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়েছে, বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে এবং তাদের জিনিসপত্র নিরাপদে স্থানান্তর করতে সহায়তা করেছে।
এই নদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে
নেপালের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে যে বাগমতি, হনুমন্তে, মনোহরা, ধোবি খোলা, বিষ্ণুমতি, নাকখু এবং বলখু নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধিকারিকরা সতর্ক করেছেন, বন্যা রাস্তার ধারে পৌঁছে জনবসতিতে প্রবেশ করতে পারে। বন্যার ঝুঁকির কারণে বাসিন্দা এবং গাড়িচালকদের নদীর তীর ধরে ভ্রমণ এড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে উত্তরবঙ্গেও জলমগ্ন বহু এলাকা, জাতীয় সড়ক-সহ বিভিন্ন রাস্তায় ধস নেমেছে। সমতল থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পাহাড়। কোচবিহারের মাথাভাঙা, দিনহাটা, জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা, ধূপগুড়িও জলমগ্ন। জল ঢুকে গিয়েছে সাধারণ মানুষের বাড়িতে। জল জমে রয়েছে রেললাইনেও। জলবন্দি কয়েক হাজার পরিবার। উত্তাল তিস্তা, মহানন্দা, জলঢাকা, তোর্সা। বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গে। এক রাতের প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জনজীবন কার্যত থমকে গিয়েছে। দার্জিলিঙ ও সংলগ্ন এলাকায় টানা বর্ষণে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুখিয়া পোখরিতে ভূমিধসে ও মিরিকের কাছে একটি লোহার সেতু ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের।