৪৮ ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও উত্তাল নেপাল। সোশ্যাল মিডিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিয়েছে নেপাল সরকার। এরপরই একে একে পদত্যাগ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী। কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর তাঁর বাসভবন লুট করা হয়। নেপালের আন্দোলন যেন স্মরণ করাচ্ছে বাংলাদেশের অরাজক পরিস্থিতিকে। জেন জি আন্দোলন কোন পথে? সোশ্যাল মিডিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর এবার জেন জি বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলি কী কী? নেপালের অরাজক পরিস্থিতির সমস্ত আপডেট পেতে নজর রাখুন bangla.aajtak.in-এ।
জনপ্রিয় নেপালি শিল্পপতি উপেন্দ্র মাহাতোর বাড়িতে লুটপাট এবং ডাকাতি চালাল বিক্ষোভকারীরা। তিনি বর্তমানে মস্কোতে থাকেন। নেপালের তৃতীয় ধনীতম ব্যক্তি এই উপেন্দ্র মাহাতো। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৫০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
নেপালি সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের কাছে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে।
শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নেপালের সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করছে, দাবি করল সেনা। তবে এই বিক্ষোভ পরিস্থিতিতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অনেক সরকারি সম্পত্তিও ধ্বংস হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে তারা। পাশাপাশি এখনও যে সমস্ত ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী উচ্ছৃঙ্খল অবস্থা জারি রাখার জন্য লাগাতার উস্কানি দিয়ে চলেছে তারা বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার কথাও বলা হয়েছে। এই গোষ্ঠী ভাঙচুর, লুটপাট, হিংসাত্মক আক্রমণ চালাচ্ছে বলেও দাবি সেনার। বিক্ষোভকারীর আড়ালে চলছে যৌন হেনস্থাও।
নেপালের সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, নেপালের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।
Gen Z আন্দোলনে মৃতদের সরকারিভাবে ‘শহিদ’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। শহিদ পরিবারগুলিকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্মান, অভ্যর্থনা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। বেকারত্ব, কর্মসংস্থানের জন্য দেশছাড়া হওয়া এবং সামাজিক অবিচার দূর করতে বিশেষ কর্মসূচি আনা হবে। এই আন্দোলন কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির জন্য নয়, বরং গোটা প্রজন্ম ও জাতির ভবিষ্যতের জন্য। শান্তির প্রয়োজন আছে, কিন্তু তা কেবল একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তির উপরেই সম্ভব। রাষ্ট্রপতি এবং নেপালের সেনাবাহিনীর কাছে আশা করা হচ্ছে যে আমাদের প্রস্তাবগুলি ইতিবাচকভাবে কার্যকর করা হবে।
নেপালে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফুর মেয়াদ বাড়ান হয়েছে, জানাল নেপাল আর্মি।
নেপালের বাঁকে জেলার ক্ষত্রিয় জেল এবং কিশোর সুধার গৃহে হইচই। ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রথম জেলের ৫৮৫ কয়েদির মধ্যে ১৪৯ জন এবং পরেরটির ১৭৬ কয়েদির মধ্যে ৭৬ জন জেল থেকে পলাতক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সশস্ত্র পুলিশ গুলি চালায়। সে সময়েই আহত হন কয়েক জন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই ৫ জনের মৃত্যু হয়। আপাতত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনা।
প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের একদিন পর, রাজধানীর রাস্তায় নিস্তব্ধতা। অনেক জায়গায় ভবন পুড়ে যেতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিনের সহিংস বিক্ষোভের পরেও পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ। প্রশাসন শান্তি বজায় রাখার জন্য ক্রমাগত আবেদন করছে।
নেপালে বসবাসকারী সমস্ত ভারতীয় নাগরিককে তাঁদের ঘরে থাকতে, রাস্তায় বের হওয়া এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। নেপাল কর্তৃপক্ষ এবং কাঠমান্ডুতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস সুরক্ষা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশে আটকা পড়া ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ২টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে নয়াদিল্লি। কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হলে, কাঠমান্ডুতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করতে বলা হয়েছে। ১) +৯৭৭ – ৯৮০ ৮৬০ ২৮৮১ (হোয়াটসঅ্যাপ), ২) +৯৭৭ – ৯৮১ ০৩২ ৬১৩৪ (হোয়াটসঅ্যাপ)।
স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জানিয়েছেন বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার হংসরাজ পাণ্ডে। ডোমেস্টিক, ইন্টারন্যাশনাল এমনকী ব্যক্তিগত হেলিকপ্টারও ওঠানামা করবে না।
কাঠমান্ডু সহ নেপালের বিভিন্ন ছোট বড় শহরে রাস্তায় চলছে সেনার টহল। বুধবার সকাল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে। শান্তি এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেনার সঙ্গে সহযোগিতা করার আর্জি জানানো হচ্ছে নেপালিদের।
নেপালের পার্লামেন্টে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ব্যাপক ভাঙচুর এবং বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গিয়েছে। আজ অর্থাত্ বুধবার সকালে নেপাল সংসদভবনের যে ছবি ধরা পড়ল।
ভারতের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও নেপালের ধাঁচে বিক্ষোভের আশঙ্কা। এর জন্য ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতেও বাড়তি নজর রাখছে ইন্টালিজেন্স এজেন্সি।
ভারত-নেপাল সীমান্তেও কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। সীমান্তের ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করা হয়েছে। নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ভারতের উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্য নেপালের সীমান্তবর্তী। নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পাঁচ রাজ্যেই সীমান্তে তৎপরতা বেড়েছে।
নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দখল নিয়েছে সেনা। বিমানবন্দরের গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। আপাতত বিক্ষিপ্ত ভাবে বিমান ওঠানামা করছে কাঠমান্ডুর এই বিমানবন্দরে। নয়াদিল্লি এবং কাঠমান্ডুর মধ্যে রোজ ৬টি করে বিমান চালায় এয়ার ইন্ডিয়া। ৪টি উড়ান বাতিল করা হয়েছে। ইন্ডিগো এবং নেপাল এয়ারলাইন্সও দিল্লি-কাঠমান্ডু ফ্লাইট বাতিল করেছে বুধবার।