১০ হাজারেরও বেশি প্রতিবাদী জেন-জি কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে পড়েছে। ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স হ্যান্ডলের মতো সোশ্যাল মিডিয়াগুলিকে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা। কাতারে কাতারে তরুণ-তরুণী জড়ো হন নেপালের সংসদ ভবনের সামনে। ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়েন তারা। জানা গিয়েছে, সংসদ ভবনের একাংশে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। ভবনের ২ নম্বর গেটের একাংশ দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করে নিরাপত্তারক্ষীরা। আগুন জ্বালানোর পাশাপাশি বিল্ডিংয়ের একাংশে ভাঙচুরও চালানো হয়। এরপরই শুট অ্যাট সাইটের অর্ডার দেয় প্রশাসন।
প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বাসভবনের বাইরেও নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। নামানো হয়েছে সেনাও। প্রেসিডেন্টের বাসভবনও আর্মি ও ব়্যাফে ঘিরে রাখা হয়েছে। জেন-জি বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় দেখলেই গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেনাকে।
জানা গিয়েছে, নেপালের এই বিক্ষোভের জেরে এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। সিভিল হাসপাতালে ২ জনের। বাকিরাও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। আহত কমপক্ষে ৮০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
কেন নিষিদ্ধ ফেসবুক-ইউটিউব?
গত ২৮ অগস্ট নেপাল সরকার জানিয়েছিল, ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিকে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে সরকারের খাতায় নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। ৩ অগাস্ট সেই সময়সীমা শেষ হয়। অভিযোগ, অধিকাংশ সোশ্যাল মিডিয়াই নেপালের সরকারি নির্দেশ মানেনি। এরপর ৪ অগাস্ট থেকে ফেসবুক, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপ সহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দেশের যুব সমাজের মধ্যে ক্ষোভের আঁচ পেয়ে আগেভাগেই নেপালের নানা অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করেছিল কেপি ওলির সরকার।
জেন-জি আন্দোলন
এই প্রতিবাদের নেতৃত্বে মূলত রয়েছে জেন-জি প্রজন্ম। সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের। সোমবার সকালে কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। বেলা গড়াতেই পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যায়। ছাত্র-যুবদের একাংশ ব্যারিকেড ভেঙে নেপালের পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েন। প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি ছোড়ে পুলিশ। ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কাঠমান্ডুর গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে কার্ফু জারি করা হয়েছে।