Nepal Earthquake: নেপালে ফের ভয়াবহ ভূমিকম্প। শুক্রবার গভীর রাতে কেঁপে উঠল ভারতের প্রতিবেশী দেশ। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬.৪ । নেপালের প্রশাসন সূত্রে খবর, মধ্যরাতের ভূমিকম্পে বহু বাড়ি ঘর ধসে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ১২৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত বহু। জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, সময়ের সঙ্গে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
কোথায় এবং কতজনের মৃত্যু হয়েছে ?
রুকুম পশ্চিম ও জাজারকোটে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত বলে জানা গিয়েছে। ভূমিকম্পের বিষয়ে এমনই তথ্য জানিয়েছেন রুকুম পশ্চিমের ডিএসপি নমরাজ ভট্টরাই ও জাজারকোর্টের ডিএসপি সন্তোষ রোক্কা। নেপালের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১২৯-এ পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি সচিবালয় অনুসারে, জাজারকোটে ভূমিকম্পে ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ৫৫ জন।
অন্যদিকে রুকুম পশ্চিমে ৩৬ জন নিহত ও ৮৫ জন আহত হয়েছেন।
দিল্লি-এনসিআর-এও কম্পন
শুক্রবারের ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে তা দিল্লি সহ সমগ্র উত্তর ভারতেও অনুভূত হয়েছে। বিহারের পাটনা এবং মধ্যপ্রদেশের ভোপাল পর্যন্ত ভূমিকম্পের হালকা কম্পন বোঝা গিয়েছে। দিল্লি-এনসিআারে, কম্পনের সময়ে বাসিন্দারা তাঁদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।
ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল নেপালের জাজারকোট জেলায়
নেপালের জাতীয় ভূমিকম্প পরিমাপ কেন্দ্রের মতে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নেপালের জাজারকোট জেলার লামিডান্ডা এলাকায়। ভূমিকম্পের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্ড। উদ্ধার ও ত্রাণের জন্য দেশের মোট ৩টি উদ্ধারকারী সংস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে ৩ অক্টোবর, ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পে দিল্লি-এনসিআর এলাকা সহ উত্তর ভারতের বেশ কিছু অংশে কম্পন অনুভূত হয়। সেই সময়ে নেপালেও ভূমিকম্প টের পাওয়া গিয়েছিল।
গত কয়েক মাসে নেপালে ভূমিকম্পের ঘটনা বেড়েছে। গত মাসে ২২ অক্টোবর যে ভূমিকম্প হয়েছিল, তারও কেন্দ্রস্থল ছিল নেপাল।
রাকুমে ৩৬ জন এবং জাজারকোটে ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে
নেপালের ভূমিকম্পে মোট মৃতের সংখ্যা ১২৯-এ পৌঁছেছে। রুকুম পশ্চিমে প্রায় ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভোর ৫টার দিকে এই তথ্য জানা গিয়েছে। রুকুম পশ্চিমের প্রধান জেলা আধিকারিক হরি প্রসাদ গন্ত সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য দিয়েছেন। একই সঙ্গে জাজারকোর্টে অন্তত ৯২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। অনেকে আহত হয়েছেন এবং গুরুতর আহত কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য সুরক্ষেতে পাঠানো হয়েছে।
আপদকালীন হিসাবে এসডিআরএফ-এর সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া কোনও SDRF জওয়ান ছুটিতে যেতে পারবেন না বলে বলা হয়েছে। নেপাল সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের জেলাগুলিতে, লখিমপুর খেরি, পিলিভীত, বাহরাইচ, শ্রাবস্তী, বলরামপুর, সিদ্ধার্থনগর এবং মহারাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটেও ভূমিকম্পের হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে ভারতে প্রাণহানি বা অন্য কোনও ক্ষয়ক্ষতির কোনও তথ্য আপাতত নেই।
ভূমিকম্প কেন হয়?
পৃথিবীর উপরের পৃষ্ঠ সাতটি টেকটোনিক প্লেট দ্বারা গঠিত। সহজ ভাষায়, যখনই এই প্লেটগুলো একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তখনই ভূমিকম্পের আশঙ্কা থাকে। যখন এই প্লেটগুলি একে অপরের স্থানে প্রবেশ করার চেষ্টা করে তখনই ভূমিকম্প হয়। এই প্লেটগুলি একে অপরের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে প্রচুর শক্তি নির্গত হয়। ঘর্ষণের কারণে উপরের পৃথিবী পৃষ্ঠ কাঁপতে থাকে। কখনও কখনও ভূপৃষ্ঠে ফাটলও এসে যায়।