রাষ্ট্রসংঘে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হেলি ট্রাম্প প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, ভারত-মার্কিন সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দাঁড়িয়ে। ওয়াশিংটনকে যদি চিনের বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা দরকার।
ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে নিকি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত রাশিয়ার তেল এবং শুল্ক বিরোধের বিষয়টিকে বিশ্বের দুই বৃহত্তম গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে দেওয়া উচিত নয়।
তিনি লেখেন, 'আমেরিকার তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। চিনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য আমেরিকার ভারতের মতো বন্ধুর প্রয়োজন।'
রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে বিতর্ক
ভারতের রাশিয়া থেকে তেল নেওয়া অব্যাহত রাখার জন্য নয়াদিল্লির উপর ট্রাম্প ২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক এবং অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর থেকে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি আলোচনায় মার্কিন ভূমিকা নিয়ে কয়েক মাস ধরে উত্তেজনা চলে। এরপর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের চাপ সমর্থন করেন হ্যালি। বলেন, ভারতের জ্বালানি ক্রয় 'ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধের অর্থায়নে সহায়তা করছে এটা ঠিক।' তবে, তিনি ভারতকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করার বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেন, "এশিয়ায় চিনা আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো একমাত্র দেশটির ২৫ বছরের অগ্রগতি ধ্বংস করা হবে একটি কৌশলগত বিপর্যয়।"
তিনি যুক্তি দেন, ওয়াশিংটনের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা লক্ষ্যের জন্য ভারত অপরিহার্য। যেখানে আমেরিকা তাদের সরবরাহ চেইন চিন থেকে দূরে সরিয়ে নিতে চায়। সেখানে ভারত টেক্সটাইল, ফোন এবং সৌর প্যানেলের মতো শিল্পের জন্য 'চিনের মতো স্কেল' উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইজরায়েলের মতো মিত্রদের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন, যা তিনি মুক্ত বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসাবে বর্ণনা করেন।
ভারত চিনের প্রভাব কমাবে
হ্যালি বলেন, চিনের অর্থনৈতিক উত্থানের পর দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ভারতের উত্থান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়ন হতে পারে। তিনি বলেন, "সহজ ভাষায়, ভারতের শক্তি বৃদ্ধি পেলে চিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা হ্রাস পাবে।"
দক্ষিণ ক্যারোলিনার প্রাক্তন গভর্নর এই অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে সরাসরি কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে বেজিং এই বিরোধকে কাজে লাগাবে।