Pakistan Bangladesh: ভারতের বিরুদ্ধে ভাই-ভাই পাকিস্তান-বাংলাদেশ? ইউনূস থাকতেই গোপন চুক্তির ফন্দি ইসলামাবাদের

Pakistan-Bangladesh Defence Deal: দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে নতুন ঘূর্ণাবর্ত? পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রস্তাবিত এক গোপন প্রতিরক্ষা চুক্তিকে কেন্দ্র করে বাড়ছে জল্পনা। সূত্রের খবর, এই সম্ভাব্য ডিফেন্স ডিল শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়।

Advertisement
ভারতের বিরুদ্ধে ভাই-ভাই পাকিস্তান-বাংলাদেশ? ইউনূস থাকতেই গোপন চুক্তির ফন্দি ইসলামাবাদেরপাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রস্তাবিত এক গোপন প্রতিরক্ষা চুক্তিকে কেন্দ্র করে বাড়ছে জল্পনা।
হাইলাইটস
  • পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রস্তাবিত এক গোপন প্রতিরক্ষা চুক্তিকে কেন্দ্র করে বাড়ছে জল্পনা।
  • সূত্রের খবর, এই সম্ভাব্য ডিফেন্স ডিল শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়।
  • ভারতের স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থের নিরিখেও বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল।

Pakistan-Bangladesh Defence Deal: দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে নতুন ঘূর্ণাবর্ত? পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রস্তাবিত এক গোপন প্রতিরক্ষা চুক্তিকে কেন্দ্র করে বাড়ছে জল্পনা। সূত্রের খবর, এই সম্ভাব্য ডিফেন্স ডিল শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং ভারতের স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থের নিরিখেও বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। একটু সহজ ভাষায় পুরোটা বোঝা যাক।

গত কয়েক মাসে ঢাকায় একের পর এক পাকিস্তানি উচ্চপদস্থ সামরিক ও গোয়েন্দা আধিকারিক এসেছেন। পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান, নৌসেনা প্রধান, এমনকি কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিকও বাংলাদেশ সফর করে গিয়েছেন। সরকারিভাবে এই সফরগুলিকে ‘সৌজন্যমূলক’ বলা হলেও, কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এর নেপথ্যে সুপরিকল্পিত অ্যাজেন্ডা থাকতে পারে।

সূত্রের দাবি, পাকিস্তান চাইছে বাংলাদেশের সঙ্গে NATO-ধাঁচের একটি মিউচুয়াল ডিফেন্স এগ্রিমেন্ট করতে। অর্থাৎ, এক দেশের উপর হামলা হলে তা দুই দেশের উপর হামলা বলেই গণ্য হবে। সম্প্রতি পাকিস্তান সৌদি আরবের সঙ্গে এমনই একটি চুক্তি সই করেছে। সেই চুক্তিকেও ভারতের বিরুদ্ধে স্ট্র্যাটেজিক ভারসাম্য রচনার প্রয়াস বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। এবার সেই মডেলেই বাংলাদেশকে পাশে টানতে চাইছে ইসলামাবাদ।
picture

আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়টি হল, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের আগেই এই প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করাতে আগ্রহী পাকিস্তান। সূত্রের খবর, মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই চুক্তিটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই নাকি যৌথ খসড়া প্রস্তুত করার জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমন্বয়ের ব্যবস্থাও তৈরি হয়েছে। সম্ভাব্য চুক্তিতে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, যৌথ সামরিক মহড়া এবং প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণের মতো বিষয় থাকতে পারে।

তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন একটাই। এই ডিলে কি পরমাণু সহযোগিতার কোনও ধারা থাকতে পারে? সরকারিভাবে এখনও সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট নয়। কিন্তু যদি তেমন কিছু অন্তর্ভুক্ত হয়, তা হলে ভারতের নিরাপত্তার পক্ষে তা মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। অতীতে সৌদি আরবের প্রসঙ্গেও পাকিস্তান তার পরমাণু ক্ষমতা নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিল। সেই নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে কম বিতর্ক হয়নি।

Advertisement

picture
পাক সেনা জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক ইউনূসের।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভারত-বিরোধী মনোভাব পাকিস্তানের পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি বলে মত পর্যবেক্ষকদের। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের শাসক দলের এক শীর্ষ নেতা প্রকাশ্য সভা থেকে ভারত-বিরোধী সুরে বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সামরিক জোটের দাবিও তুলেছেন। 

ভারত সরকার এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, নয়াদিল্লি গোটা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে। যদি এই প্রতিরক্ষা চুক্তি বাস্তবায়িত হয়, তবে ভারতের পূর্ব সীমান্তে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ বহুগুণ বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারত ও বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে ঘুঁটি সাজাতে হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, পাকিস্তানের এই তৎপরতার পিছনে অন্য একটি কারণও রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, নির্বাচনের পর যদি বাংলাদেশে ভারত-ঘনিষ্ঠ কোনও নেতৃত্ব ক্ষমতায় আসে, তা হলে এই ডিল কার্যত মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। তাই সময় থাকতেই চাপ বাড়াচ্ছে ইসলামাবাদ।

তবু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় কি ফের জোট আর অবিশ্বাসের কূটনীতির কালো মেঘ ফিরে আসবে? ভারতের বিরুদ্ধে এই সম্ভাব্য চক্রব্যুহ কি বাস্তবায়িত হবে? নাকি কূটনৈতিক দাবা শুধুমাত্র 'থিওরি' আকারেই আটকে যাবে? তার উত্তর সময়ই দেবে। কিন্তু আপাতত এই জল্পনা যে যথেষ্ট উদ্বেগজনক, তা বলাই বাহুল্য। 

POST A COMMENT
Advertisement