একজনের মৃত্যুর বদলা নিতেই ৯০ জনকে খুন করা হয়েছে! পাকিস্তানের পেশোয়ারে মসজিদে আত্মঘাতী হামলার পর এমনই হুঙ্কার দিল তেহরিক-এ-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। সোমবার মসজিদে প্রার্থনার সময় হামলা চালান টিটিপির বোমারু জঙ্গি। সেই ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯০ জন। আহত ৫০।
সোমবার পাকিস্তানের পেশোয়ারের হাই সিকিউরিটি জোনে ভরা মসজিদে হামলা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৯০ জন মারা গেছেন। এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) হামলার দায় স্বীকার করেছে। টিটিপি বলেছে, এই হামলা উমর খালিদ খুরাসানির মৃত্যুর প্রতিশোধ। প্রশ্ন উঠছে কে উমর খালিদ খুরাসানি, যার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে টিটিপি এতবড় হামলা করল।
জানা গেছে, উমর খালিদ খুরাসানি টিটিপির কমান্ডার ছিলেন, যিনি গত বছরের আগস্টে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন। খোরাসানির ভাই এবং টিটিপি সদস্য মোকাররমের মাধ্যমে এটি প্রকাশ পায় যে সে খোরসানির মৃত্যু তারা ভুলতে পারেনি। এবং সেজন্যই পুরো প্রস্তুতি নিয়ে পেশোয়ার মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে।
উমর খালিদ খোরাসানি কে?
হামলার পর পরই তার দায় স্বীকার করে টিটিপি জঙ্গি সংগঠন। একই সঙ্গে তারা বার্তা দেয়, এই হামলা হল উমর খালিদ খুরাসানির মৃত্যুর বদলা। টিটিপির এই হুঙ্কারের পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কে এই খুরাসানি? টিটিপির কমান্ডার ছিলেন খুরাসানি। ২০২২-এর অগস্টে পাকিস্তান সেনার গুলিতে নিহত হন তিনি। পাকিস্তানের স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দাদার মৃত্যুর বদলা নেওয়ার জন্য তলে তলে হামলার প্রস্তুতি চালাচ্ছিলেন তাঁর ভাই মুকর্রম। সোমবার মসজিদে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁরই।
খুরাসানির আসল নাম আব্দুল আলি মহম্মদ। করাচির এক মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার সময় খুব অল্প বয়সেই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেন। প্রথমে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-মুজাহিদিনে যোগ দিয়েছিলেন। এই জঙ্গি দলটি মূলত কাশ্মীরে সক্রিয় ছিল। এর পর টিটিপির সদস্য হন। কাশ্মীরে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন খুরাসানি। ২০১৪ সালে টিটিপির শাখা সংগঠন জামাত-উল-আহরারের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এই জঙ্গি সংগঠনটি মূলত আমজনতা, সংখ্যালঘু এবং সেনা জওয়ানদের উপর হামলা চালাত। জামাত-উল-আহরার পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ থেকে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক চালাত। বহু হামলার সঙ্গে জড়িত এই সংগঠনটি।