India Pakistan News: তালিবানরা তো মারছেই, ভারত আরও মারবে? বুঝতে পেরে বিতর্কিত মন্তব্য পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

তালিবানের পাশাপাশি এবার সীমান্তে তাদের ভারতের বিরুদ্ধেও লড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খজা আসিফ। তাঁর দাবি, সীমান্তে যে কোনও মুহুর্তে ভারত কোনও একটি বড় পদক্ষেপ করতে পারে। পাকিস্তান তার জন্য প্রস্তুত।

Advertisement
তালিবানরা তো মারছেই, ভারত আরও মারবে? বুঝতে পেরে বিতর্কিত মন্তব্য পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীরনিজস্ব চিত্র।
হাইলাইটস
  • তালিবানের পাশাপাশি সীমান্ত ভারতও বড় কিছু করতে পারে
  • আশঙ্কায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
  • পাকিস্তান সবরকম ভাবে প্রস্তুত বলে জানান তিনি


পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্তরী খজা আসিফ নতুন করে বিতর্কিত মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। তিনি একটি টেলিভিশন ইন্টারভিউতে জানিয়েছেন, পাকিস্তান দুই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। তালিবানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষের মাঝেই ভারতও যে কোনও মুহুর্তে নোংরা পদক্ষেপ করতে পারে বলে উল্লেখ করছেন তিনি। 

যুদ্ধের প্রস্তুতি

খজা আসিফ বলেন, 'পাকিস্তান দ্বিমুখী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।' কিন্তু কেন? ভারত সীমান্তেও কি হিংসার আবহ তৈরি হচ্ছথে নতুন করে? পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, 'বড় সম্ভাবনা রয়েছে ভারত সীমান্তে যে কোনও মুহুর্তে নোংরা খেলা খেলে দিতে পারে। ইসলামাবাদ সে কারণে সমস্ত স্ট্র্যাটেজি তৈরি করে রেখেছে। অবশ্যই এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বড়সড় আশঙ্কা রয়েছে, সীমান্তে কিছু একটা হবে।'

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে প্রত্যাঘাতের প্রস্তুতি নিয়ে তাঁর কোনও কথা হয়েছে কি না, এ প্রশ্ন করা হলে খজা আসিফ বলেন, 'সমস্ত স্ট্র্যাটেজি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রকাশ্যে সেগুলি বলতে পারব না। যে কোনও রকম ঘটনার জন্য আমরা তৈরি।'

এর আগেও খজা আসিফ অভিযোগ তুলেছিলেন তালিবান সরকার প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছে ভারতের হয়ে। তিনি বলেছিলেন, 'আমার সন্দেহ রয়েছে আদৌ সংঘর্ষবিরতি হবে কি না। কারণ তালিবানের হয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দিল্লি। এখন দিল্লি কাবুলের সঙ্গে ছায়া যুদ্ধ লড়ছে।'

সপ্তাহখানেকের ভারত সফর শেষে আফগানিস্তানে ফিরেছেন তালিবান বিদেশমন্ত্রী মুত্তাকি। খজা আসিফ বলছেন, 'ভারত থেকে সবে ফিরেছেন মুত্তাকি। দেখা যাক কী নিয়ে এসেছেন সঙ্গে করে।'

পাক-তালিবান যুদ্ধ

পাকিস্তান যখন সীমান্ত এলাকাগুলিতে উত্তেজক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে, খজা আসিফ তখন দেশে বসবাসকারী আফগান শরণার্থীদের নিশানা করেছেন। খজা আসিফ আরও বলেন, 'আমার মনে হয় আমাদের বন্ধু ও শত্রুর মধ্যে পার্থক্য করতে শেখা উচিত। গত পঞ্চাশ বছরে আফগানিস্তানের সব শাসক, তা সে ১৯৭০ হোক, ৮০, ৯০ হোক কিংবা এই শতাব্দীর প্রথম দিকের দশক, সবাই কোনও না কোনও সময়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে। আমি তাদের নাম নিতে চাই না। কিন্তু তাদের কেউই কখনও পাকিস্তানের সাহায্যের স্বীকৃতি দেয়নি। আমরা তাদের কাছ থেকে কী পেয়েছি? সন্ত্রাসবাদ ছাড়া কিছুই না। এই সম্পর্কের কারণেই পাকিস্তান নিজের শান্তি নষ্ট করেছে। এখন যখন পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে, তারা কেন ফিরে যাচ্ছে না? এই সংখ্যাগরিষ্ঠের ফিরে যাওয়া উচিত।'

Advertisement

গত সপ্তাহে ইসলামাবাদ কাবুলে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP)-র শিবিরে হামলা চালানোর পর পাকিস্তানি ও তালিবানি বাহিনীর মধ্যে সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তান অভিযোগ করেছে, তালিবান TTP-কে আশ্রয় দিচ্ছে, যে সংগঠনটি ২০২১ সাল থেকে শত শত পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। তালিবান দাবি করেছে, তারা পাল্টা হামলায় ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে ইসলামাবাদ জানিয়েছে তারা ২০০ জন তালিবান ও মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীকে নির্মূল করেছে। সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যস্থতায় টানা দুই দিনের সংঘর্ষবিরতি গত মঙ্গলবার রাতেই ভেঙে যায়। পাকিস্তান কান্দাহার প্রদেশে বিমান হামলা চালায় এবং এতে বহু তালিবান সেনা নিহত হয়। তালিবান দাবি করেছে, পাল্টা গুলিবর্ষণে তারা প্রচুর সংখ্যক পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে এবং পাকিস্তানি অস্ত্র ও ট্যাংক দখল করেছে। সংঘর্ষের সময় দখল করা পাকিস্তানি টি-৫৫ ট্যাংকে চড়ে থাকা তালিবান যোদ্ধাদের দৃশ্য আর পাকিস্তানি সেনাদের পোশাক ও অস্ত্র প্রদর্শন ইসলামাবাদকে বিব্রত করেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। 

যেভাবে তালিবান সেনা সহজেই পাকিস্তানের সীমান্ত ঘাঁটিগুলি দখল করেছে এবং পাকিস্তানি সেনাদের উপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে, তা ইসলামাবাদের গোয়েন্দা ও নজরদারি ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এক সপ্তাহব্যাপী তীব্র সংঘর্ষ ও সীমান্তপারে বিমান হামলায় দুই পক্ষেরই বহু প্রাণহানির পর পাকিস্তান ও তালিবান অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

 

POST A COMMENT
Advertisement