
ইমরান খান সম্পর্কে নানাবিধ খবরে তোলপাড় পাকিস্তান। এই খবর নাড়িয়ে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর আসিম মুনিরকেও। রাওয়ালপিণ্ডি থেকে ইসলামাবাদ, লাহোর থেকে পেশোয়ার, সর্বত্রই গুঞ্জন ছড়িয়েছে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে। ইমরান খানকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তাঁর ৩ বোন আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। একদিকে, কারাগারে গিয়ে ইমরানের সঙ্গে দেখা করার জন্য অনড় বোনেরা। অন্যদিকে, ইমরানের দল PTI-এর নেতা-কর্মীরা রাওয়ালপিণ্ডির জেলের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন। ইমরান এবং জেমিমা খানের ছেলে কাসিম বাবা বেঁচে থাকার প্রমাণও দাবি করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, কেন আসিম মুনির ইমরানকে নিয়ে এত সাসপেন্স বজায় রাখছেন?
ইমরানের পক্ষে জোরাল সওয়াল
রাওয়ালপিণ্ডি থেকে ইসলামাবাদ এবং লাহোর থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত ইমরান খানকে নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। তিনি এই মুহূর্তে রাওয়ালপিণ্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি। তাঁর সঙ্গে কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।
৪ মাস আগে ইমরান খানকে নিয়ে পাকিস্তানে ঠিক এভাবেই ঝড় উঠেছিল। ইমরানের ২ বোন, ছেলে তাঁর মুক্তির দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আসিম মুনির ১৪৪ ধারা জারি করে PTI এবং ইমরানের পরিবারকে আটকে দেয়। সে সময় থেকেই ইমরানকে কারাগারের ভিতর হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তুলেছিলেন পরিবারের সদস্যরা।
ইমরান খানের ছেলে কাসিম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্ট শেয়ার করে বলেন, 'আমার বাবাকে ৮৪৫ দিন আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গত ৬ সপ্তাহ ধরে তাঁক একা একটি ডেথ সেলে রাখা হয়েছে। কাউকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী আমার খালাদেরও বাবাকে দেখতে দেওয়া হয়নি। এটি নিরাপত্তা এবং উদ্বেগের থেকেও বেশি ইচ্ছাকৃত একটি কাজ। সরকার বাবার আসল অবস্থা গোপন করছে।'
ইমরান খানের বোন নূরিন নিয়াজিকে কারাগারের বাইরে চুল ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এবার তিনি সরাসরি আসিম মুনিরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। নূরিন নিয়াজি বলেন, 'ইমরান খানের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। নিপীড়নের চরম স্তরে পৌঁছেছে ওরা। আসিম মুনির চাইছেন ইমরান খান তাঁর কাছে মাথা নত করুক, দেশ ছেড়ে চলে যান, ক্ষমা চেয়ে নিক। সে কারণেই ইমরান খানের উপর সীমা ছাড়ানো নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু ইমরান কখনও মাথা নত করবে না। কখনও দেশ ছেড়ে যাওয়ার চুক্তি করবে না।'
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখওয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিগিও ইমরান খানের বোনেদের সমর্থমে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে পৌছন। তাঁর দাবি, আদালতই তাঁকে ইমরানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছে। তবে যখন তিনি আদিয়ালা জেল চত্বরে পৌঁছন, প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করায় সোহেল আফ্রিদিকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।
বিদ্রোহের আশঙ্কা মুনিরের
ইমরান খান কারাগারে কেমন আছেন এবং তাঁকে কীভাবে আটকে রাখা হয়েছে, তা জানতে পরিবার, সমর্থক, আইনজীবী ও ডাক্তারেরা দেখা করার চেষ্টা করছেন। এবার প্রশ্ন, আসিম মুনির কি ভয় পাচ্ছেন, ইমরান খান তাঁর সমর্থকদের কাছে এমন একটি বার্তা পাঠাতে পারেন যা মুনিরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঢেউ তুলবে।