Taliban : তালিবান মারছে, বালোচরা মারছে, ভারতও মারছে, পাকিস্তান ম্যাপে থাকবে তো?

ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পাকিস্তান। ঘরে বাইরে প্রবল চাপে শেহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের পূর্বে ভারতের সঙ্গে সংঘাত চলছে, দক্ষিণ পশ্চিমে বালুচিস্তানেও নিজেদের শাসন কায়েম রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে পাকিস্তান। এবার গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো হাজির তালিবানরা।

Advertisement
তালিবান মারছে, বালোচরা মারছে, ভারতও মারছে, পাকিস্তান ম্যাপে থাকবে তো? Muhammad Shehbaz Sharif
হাইলাইটস
  • ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পাকিস্তান
  • গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার পাকিস্তানের গলার কাঁটা এখন তালিবানরা

ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পাকিস্তান। ঘরে বাইরে প্রবল চাপে শেহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের পূর্বে ভারতের সঙ্গে সংঘাত চলছে, দক্ষিণ পশ্চিমে বালুচিস্তানেও নিজেদের শাসন কায়েম রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে পাকিস্তান। এবার গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো হাজির তালিবানরা। তাদের দমনে ইসলামি দেশগুলোকে পাশে চাইছেন আসিফ মুনিররা। তবে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন।

তালিবানরা সম্প্রতি দাবি করেছে, তাদের হামলায় এক ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়েছে। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (PICSS) অনুসারে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে সংখ্যক হিংসা বা আক্রমণের মুখে পাকিস্তানকে পড়তে হয়েছে তা ২০২৪ সালের সমান। পাঁচশোরও বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। মারা গিয়েছে কয়েক শো মানুষ। চলতি বছর এখনও শেষ না হলেও পাকিস্তান ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বের মধ্যে সবথেকে সহিংস কার্যকলাপে যুক্ত থাকা দেশে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনদিক থেকে আক্রমণের মুখে পড়ার ফলে অভ্যন্তরীণ চাপও বাড়ছে পাকিস্তানের। 

পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানের শত্রুতা 

পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানিদের সম্পর্ক এক সময় ভালো ছিল। ২০২১ সালে তালিবানিরা যখন আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে তখন পাকিস্তান আশা করেছিল, তাদের সঙ্গে তালিবানি নেতাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। সেজন্য আফগানিস্তানের নয়া শাসকদের স্বাগত জানিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল। তবে বাস্তবে উল্টোটা হয়। 

পাকিস্তান-আফগানিস্তানের সীমান্ত নির্ধারণকারী যে ডুরান্ড লাইন আছে তাকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে তালিবানরা। ২০২১ সালেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, পাকিস্তানকে পরে তালিবানদের জন্য অনুশোচনা করতে হবে। সম্প্রতি সেই রাষ্ট্রদূত সাফ বলেন, 'আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ হলে ক্ষতি হবে শেহবাজ শরিফদেরই। তাদের সমর্থন করার বার্তা দিয়ে পাকিস্তান ভুল করেছিল। আর যদি তালিবানদের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চায়, সেটা আরও ভুল হবে।' 

সঙ্কটে পাকিস্তান 

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের অভিযোগ  তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামের জঙ্গি তালিবান সরকারের মদত পাচ্ছে। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কাবুল। কিন্তু তারা যে টিটিপির সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করবে না তাও পরিষ্কার। 

Advertisement

আবার আফগান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আর পাকিস্তানকে প্রয়োজন নেই তালিবানদের। আফগানিস্তানের অভিযোগ, শেহবাজ শরিফরা বিদেশনীতি মানছেন না। সেই কারণেই সমস্যা। আবার এই সংঘাতের মধ্যেই তালিবান নেতা তথা আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারত সফর করেছেন। এর থেকেই কার্যত পরিষ্কার ভারতকে পাশে চাইছে সেই দেশ। যা পাকিস্তানের চিন্তার বড় কারণ। 

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই পাকিস্তানি এবং আফগান সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে পাকিস্তানি বিমান বাহিনী কাবুলে  হামলা চালিয়েছে। পাল্টা তালিবানরাও ডুরান্ড লাইনে গুলি চালায়। পাকিস্তানের দাবি, এই যুদ্ধে ২০০ জন তালিবান যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তালিবানের দাবি, তারা ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। 

বালুচ বিদ্রোহ

বালুচ বিদ্রোহ অনেকদিন ধরে পাকিস্তানের গলার কাঁটা হয়ে আছে। বালুচ লিবারেশন আর্মির অভিযোগ, তাদের প্রদেশের মূল্যবান খনিজ সম্পদের অপব্যবহার করছে পাক প্রশাসন। আবার পাকিস্তান সরকার বালুচিস্তানের খনিজ আমেরিকার কাছে বিক্রি করার একটি চুক্তিও করেছে। ফলস্বরূপ বিদ্রোহীরা প্রায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। গত বেশ কয়েক বছরে এই হামলার জেরে প্রাণ হারিয়েছে বহু সেনাকর্মী। পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানও। ট্রেন হাইজ্যাকের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে বিদ্রোহীরা।


ভারতের আক্রমণেও নাজেহাল পাকিস্তান 

গত মে মাসে পাকিস্তানের উপর অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত। পাকিস্তানের ৩০০ কিমি ভিতরে ঢুকে ধ্বংস করে একের পর এক জঙ্গি ঘাঁটি। এরপর ভারত শিমলা চুক্তিও বাতিল করে। ভারত সাফ জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানকে বিশ্বের মানচিত্রে নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে গেলে সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়া বন্ধ করতে হবে। 

POST A COMMENT
Advertisement