পাকিস্তান যে আদতে সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করে, সেই প্রমাণ মিলল আরও একবার। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার মূলচক্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেল সেদেশের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রীকে। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলেছে এই ছবি। দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দুই মন্ত্রী লস্কর-ই-তইবার কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে এক মঞ্চে বসে আছেন। রয়েছে পহেলগাঁও হামলার মাস্টারমাইন্ড সাইফুল্লাহ কাসুরি এবং হাফিজ সইদের ছেলে তালহা সইদ।
২৮ মে পাকিস্তানের পঞ্জাবে ‘ইয়াওম-এ-তাকবীর’ পালিত হয়। ১৯৯৮ সালের এই দিনেই পাকিস্তান বালোচিস্তানের চগাই এলাকায় পারমাণবিক পরীক্ষা করে নিজেদের ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সেই উপলক্ষেই ২৮ মে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর সেই অনুষ্ঠানেই দিব্যি বসে থাকতে দেখা গেল লস্করের কুখ্যাত জঙ্গিদের।
এই ঘটনায় চমকে গিয়েছে গোটা বিশ্ব। তবে ভারতের কাছে এটি নতুন কিছু নয়। এর আগে, অপারেশন সিঁদুরের পর জঙ্গিনেতাদের শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছিল পাকিস্তান সেনার কর্তাব্যক্তিরা। ফলে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান আর কারও অজানা নয়।
এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে পাকিস্তানের খাদ্য মন্ত্রী মালিক রশিদ আহমেদ খান, পঞ্জাব অ্যাসেম্বলির স্পিকার মালিক মহম্মদ আহমেদ খান, লস্করের জঙ্গি সাইফুল্লাহ কাসুরি, হাফিজ সইদের ছেলে তালহা সইদ এবং আমির হামজা একসঙ্গে বসে ছিল।
এই দুই মন্ত্রী শেহবাজ শরিফের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। জঙ্গিদের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠতা দেখে চমকে গিয়েছে গোয়েন্দা মহলও। শুধু একসঙ্গে বসাই নয়, তাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছবি তুলতে, বক্তৃতা দিতেও দেখা গিয়েছে। অনুষ্ঠানে ভারত-বিরোধী উস্কানিমূলক বক্তৃতাও হয়েছে।
মঞ্চে মালিক রশিদের কথাতেও পাকিস্তানের অবস্থান আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, 'পাকিস্তানের ২৪ কোটির মানুষ আজ হাফিজ সইদ ও সাইফুল্লাহ কাসুরির মতো মানুষদের প্রতিনিধিত্ব করছে।'
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে নিন্দনীয় হল, পহেলগাঁও হামলার মাস্টারমাইন্ড সাইফুল্লাহ কাসুরির উপস্থিতি। হামলার পর থেকেই এতদিন সে গা-ঢাকা দিয়ে ছিল। এদিনের অনুষ্ঠানে ২৪ মিনিট ধরে সে লাগাতার ঘৃণাভাষণ দেয়। বলে, 'আমায় পাহেলগাঁও হামলার জন্য দায়ী করা হয়েছে। আজ পুরো দুনিয়া আমার নাম জানে।'
এই বক্তব্যের মাধ্যমেই আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল যে, পাকিস্তান তাদের দেশে সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থায় কোনও খামতি রাখেনি।
এভাবে এক মঞ্চে পাকিস্তানের সরকার ও জঙ্গিদের জোট দেখে একটি বিষয় স্পষ্ট। এবার সর্বসম্মক্ষেই জঙ্গিদের সমর্থন করছে শেহবাজ সরকার।