Thailand Crisis: খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই সাসপেন্ড, থাইল্যান্ডেও অস্থিরতা শুরু, এখন বেড়াতে যাওয়া নিরাপদ?

এই ঘটনার মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে — এতসব গোলমালে ভারতীয় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনা হওয়া উচিত কি না? ২০২৪ সালে প্রায় ২১ লাখ ভারতীয় থাইল্যান্ডে গিয়েছেন ঘুরতে। এই সংখ্যা ২০২৩-এর তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি।

Advertisement
খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই সাসপেন্ড, থাইল্যান্ডেও অস্থিরতা শুরু, এখন বেড়াতে যাওয়া নিরাপদ?পেতংটার্ন শিনাওয়াত্রা
হাইলাইটস
  • প্রধানমন্ত্রীকেই বরখাস্ত, কী ঘটেছে থাইল্যান্ডে?
  • কাকে কী বলেছিলেন শিনাওয়াত্রা?
  • ভারতীয় পর্যটকদের কী হবে? নিরাপদ আছে থাইল্যান্ড?

থাইল্যান্ড মানেই অনেক বাঙালির কাছে দিঘা বা পুরীর মতোই। ভারতীয়দের হানিমুনে সবচেয়ে পছন্দের ডেস্টিনেশনগুলির মধ্যে অন্যতম। সমুদ্র সৈকত, সস্তা, আরামদায়ক আবহাওয়া। হানিমুন বা ছুটিতে যাওয়ার কথা উঠলেই অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার থাইল্যান্ডের কথাই ভাবে। কলকাতা থেকে বিমানে তিন-চার ঘণ্টা, ভিসা পেতেও ঝামেলা নেই। কিন্তু সেই থাইল্যান্ড এখন খবরের শিরোনামে এসেছে একেবারে অন্য কারণে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকেই আদালত ‘সাসপেন্ড’ করে দিয়েছে। আর প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে তৈরি হয়েছে নতুন সীমান্ত উত্তেজনা।

প্রধানমন্ত্রীকেই বরখাস্ত, কী ঘটেছে থাইল্যান্ডে?

২০২৪ সালের অগাস্টে থাইল্যান্ডে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী হন ৩৮ বছরের পেতংটার্ন শিনাওয়াত্রা। তিনি জনপ্রিয় হলেও সম্প্রতি এক ফোনকল ঘিরে বড় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একটি লিক হওয়া ফোন কলের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পেতংটার্ন প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার এক বড় নেতার সঙ্গে নিজেদের দেশের সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেন। এই কলটি লিক হয়ে যায়, এবং বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। আদালত মনে করে, এটা দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে গুরুতর ভুল। সেই কারণে মঙ্গলবার তাঁকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। এরপরেই নতুন করে থাইল্যান্ডে অন্তর্বর্তী (কেয়ারটেকার) প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছেন ফুমথম ভেচায়াচাই।

হানিমুন ডেস্টিনেশন থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতা
হানিমুন ডেস্টিনেশন থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতা

কাকে কী বলেছিলেন শিনাওয়াত্রা?

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংটার্ন ফোন করেছিলেন কম্বোডিয়ার এক বড় নেতা হুন সেনকে। কথায় কথায় তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের যে সেনা অফিসার তোমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তার কথা তুমি গুরুত্ব দিও না। তুমি যা চাইছো, আমাকে বলো। আমি দেখে নেব কীভাবে সেটার ব্যবস্থা করা যায়।' মানে, তিনি নিজের দেশের সেনাবাহিনীকে এড়িয়ে এক বিদেশি নেতাকে খুশি করার চেষ্টা করছিলেন। এটাই ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। তার ওপর, হুন সেন এই কথোপকথন ফোনে রেকর্ড করে সেটা ফেসবুকে পোস্ট করেন এবং বলেন, 'আমি এটা ৮০ জনের বেশি মানুষের সঙ্গে শেয়ার করেছি।' ফলে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছিলেন, তা গোটা বিশ্বের সামনে চলে আসে। আর এতেই থাইল্যান্ডে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক, আর আদালত তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে দেয়।

Advertisement

কম্বোডিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ল কীভাবে?

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া দুটো দেশই বহু বছর ধরে একটা সীমান্ত বিবাদের মধ্যে রয়েছে। মূলত একটি পুরনো হিন্দু মন্দির (প্রিয়াহ বিহার) এবং তার আশপাশের জমি নিয়ে মতবিরোধ। এছাড়া মে মাসে একটি বড় ঘটনা ঘটে — এক থাই সেনার গুলিতে মারা যান এক কম্বোডিয়ান জওয়ান। এই ঘটনার পর দু'দেশের সীমান্তে উত্তেজনা চরমে ওঠে। থাইল্যান্ড সীমান্তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কম্বোডিয়াও পাল্টা ব্যবস্থা নেয় — থাই সিনেমা, টিভি শো, এমনকী ফল-মূল আমদানি বন্ধ করে দেয়।

ভারতীয় পর্যটকদের কী হবে? নিরাপদ আছে থাইল্যান্ড?

এই ঘটনার মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে — এতসব গোলমালে ভারতীয় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনা হওয়া উচিত কি না? ২০২৪ সালে প্রায় ২১ লাখ ভারতীয় থাইল্যান্ডে গিয়েছেন ঘুরতে। এই সংখ্যা ২০২৩-এর তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। পর্যটনের খরচ কম, যেতে সুবিধা — তাই থাইল্যান্ড এখনও বহু ভারতীয়র কাছে হানিমুন বা ছুটি কাটানোর সেরা জায়গা। তবে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়লেও এই মুহূর্তে থাইল্যান্ডের পর্যটন এলাকায় কোনও বড় অশান্তি নেই। তবুও, কারও থাইল্যান্ডে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে খবর দেখে ও পরিস্থিতি বুঝে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়াই ভাল।

POST A COMMENT
Advertisement