ব্রিটেন সফরে বড় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এরপর একসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন দুই রাষ্ট্রনেতা। সাধারণত, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে দেখা যায়, হিন্দিতেই উত্তর দেন। ট্রান্সলেটার তা অনুবাদ করে দেন। কিন্তু ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে যা ঘটল, সেই ভিডিও আপাতত ভাইরাল। মোদীর একটি ছোট্ট কথা গুরুগম্ভীর সাংবাদিক সম্মেলনে সবার মুখে হাসি এনে দিল। একদিকে যেমন সাংবাদিক সম্মেলনে হালকা মেজাজে ধরা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অন্যদিকে ততটাই কড়া ভাষায় বার্তা দিলেন সন্ত্রাসবাদ ও খালিস্তানপন্থীদের বিরুদ্ধে।
মোদীর হালকা মেজাজে ছোট্ট মন্তব্য VIRAL
সাংবাদিক সম্মেলনর সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ইংরেজি বক্তব্য এক মহিলা হিন্দিতে অনুবাদ করছিলেন। হঠাত্ অনুবাদক মহিলা মাঝপথে থেমে যান। বলেন, 'সরি'। তখন মোদী হেসে বলেন, 'কোনও অসুবিধা নেই। মাঝে মাঝে ইংরেজি শব্দ আমরা ব্যবহার করতেই পারি। চিন্তা করবেন না।'
মোদীর এই মন্তব্যে সবাই হেসে ওঠেন। পাশেই বসে থাকা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও হেসে বলেন, 'আমার মনে হয় আমরা একে অপরকে ভালোভাবেই বুঝতে পারি।' এই ভিডিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মোদী ও স্টারমারের হালকা মেজাজের সাংবাদিক সম্মেলনে যদিও মোদী কড়া বার্তাটি দিয়েই দিলেন।
#WATCH | "Don't bother, we can use English words in between. Don't worry about it," says PM Narendra Modi candidly as translations for questions and answers were made at their press statement and the journalists' questions that followed.
— ANI (@ANI) July 24, 2025
"I think we understand each other well,"… pic.twitter.com/VUe2wqQllG
সন্ত্রাসবাদে মোদীর স্পষ্ট বার্তা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী তিনি কড়া ভাষায় বলেন, 'যাঁরা গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে গণতন্ত্রকেই দুর্বল করেন, তাঁদের জবাবদিহি করতেই হবে।' এই বক্তব্য স্পষ্টতই ব্রিটেনে সক্রিয় খালিস্তানপন্থীদের উদ্দেশ্যে, যাঁরা বিভিন্ন সময় লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনে হামলা চালিয়েছে বা ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এই প্রসঙ্গে মোদী ইংরেজিতে বলেন, 'Those who misuse democratic freedoms to weaken democracies must be held accountable.' অ
বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইংরেজিতে এভাবে বক্তব্য রাখার পিছনে উদ্দেশ্য একটাই, সরাসরি পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলিকে বার্তা দেওয়া, যারা হয়তো এই ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিদের প্রতি নরম মনোভাব দেখায়।
আগে কোথায় বলেছেন এমন?
এটাই প্রথম নয়। পহেলগাঁও হামলার পরেও পশ্চিমী দেশগুলিকে মোদী ইংরেজি ভাষাতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ভারত কড়া জবাব দেবে। তারপরেই 'অপারেশন সিঁদুর'-এ তছনছ হয়ে যায় পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলি। বিহারের একটি সভায় তিনি বলেছিলেন, 'India will identify, track and punish every terrorist and their backers.' (ভারত প্রত্যেক সন্ত্রাসবাদী এবং তাদের মদতদাতাকে চিহ্নিত করবে, খুঁজে বার করবে এবং শাস্তি দেবে।)
এই সফর শুধু দু’দেশের সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে মোদীর মানবিকতা ও দৃঢ়তা, অন্যদিকে ব্রিটেনের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, এই দুই দিকই সামনে এল লন্ডনের সাংবাদিক বৈঠকে।