ভারত শান্তির পক্ষে। আগেই ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিদেশমন্ত্রক। বিশ্বমঞ্চে ভারত আর কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করে না। গঠনমূলক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নেয়। আর সেই কারণেই, এবার গাজায় শান্তি ফেরানোর মিটিংয়েও ডাক এল ভারতের। প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানালেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল সিসি। মিশরের শার্ম আল শেখ শহরে এই বৈঠক হওয়া কথা।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে সেই বৈঠকে যেতে পারছেন না। তবে তাঁর পরিবর্তে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিংকে প্রতিনিধি হিসাবে পাঠানো হবে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মধ্যপ্রাচ্যে স্টেবিলিটি ফেরানোর চেষ্টায় ভারত গঠনমূলক ভূমিকা নিতে চায়।
বলাই বাহুল্য, মিশরের এই বৈঠক সাম্প্রতিক অতীতের অন্যতম উচ্চ পর্যায়ের আন্তর্জাতিক বৈঠক হতে চলেছে। বৈঠকের সহ-সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন রাষ্ট্র সংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টার্মার, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য, ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান খোঁজা। সম্প্রতি ইজরায়েলি সেনা গাজা থেকে আংশিকভাবে সেনা সরিয়ে নিয়েছে। যুদ্ধবিরতিও ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বহু বাস্তুচ্যুত পরিবার ফের তাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরগুলিতে ফিরতে শুরু করেছেন।
তবে এতকিছুর পরও যে শান্তি ফিরেছে, তা বলা যায় না। প্যালেস্তাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা ট্রাম্পের তৈরি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে না। তাদের দাবি, চুক্তিতে নিরস্ত্রীকরণ বা অস্ত্র জমা দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে। সেই শর্তটাই তারা মানতে নারাজ। হামাসের বক্তব্য, গাজার মানুষকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবও 'অপমানজনক'।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা। আর তারপর থেকেই সংঘর্ষ চরমে পৌঁছায়। ঘটনার পরপর ইজরায়েলের পাল্টা আঘাতে দুই পক্ষেই হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, ইজরায়েল ২৫০ জন বন্দি এবং ১,৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে হামাস ৪৭ জন ইজরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
উল্লেখ্য, এই শান্তি প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা তদারকির জন্য একটি আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সেই টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে মার্কিন সেনাবাহিনী। মিশর, কাতার, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে এই টাস্কফোর্স কাজ করছে।
আপাতত শার্ম আল শেখের বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই বৈঠক কোনও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান দিতে পারে কিনা, সেই প্রশ্নই সকলের মনে।