পর্বতারোহণের জগতে নতুন ইতিহাস। পৃথিবীর প্রথম ব্যক্তি হিসাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়াই মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া থেকে স্কি করে নীচে নেমে এসেছেন পোল্যান্ডের আন্দ্রেজ বার্গিয়েল। যার ফলে তাঁকে ঘিরে সারা পৃথিবীতেই জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। সকলেই তাঁর এই কীর্তিকে বিস্ময়ের চোখে দেখে সাধুবাদ জানাচ্ছেন।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক কীর্তির জন্য সুপরিচিত আন্দ্রেজ। ২০১৮ সালে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কে২ থেকে সফল ভাবে স্কি করে নীচে নেমে আসেন। এটাও তিনি বিশ্বের প্রথম মানুষ হিসাবেই করেন। আর এ বার নিজের রেকর্ড ভেঙে একবারে ৮৮৮৪৯ মিটারের এভারেস্ট থেকে অক্সিজেন ছাড়া স্কি করে নীচে নেমেছেন তিনি। তাঁর এই কৃতিত্ব সহনশীলতা ও ইচ্ছাশক্তির এক নতুন নজির গড়ল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রয়টার্স জানিয়েছে, এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে মোটামুটি ১৬ ঘণ্টা লেগেছে তাঁর। আর এই গোটা সময়টা তিনি বহু ঝড়ঝাপটা সামলেছেন। বিশেষত, অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে না থাকায় সমস্যা হয়েছে আরও বেশি।
এভারেস্টের ডোথ জোন পার করে চূড়ায় পৌঁছানোর পর সেখানে কিছু ক্ষণ ছিলেন আন্দ্রেজ। তারপর স্কি পরে নীচের দিকে নামতে থাকেন।
নিজের এই অদ্ভুত যাত্রার ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন আন্দ্রেজ। সেই ভিডিয়োতে দেখা যায়, এভারেস্টের সাদা বরফের চাদরের মধ্যে দিয়ে স্কি করে নামছেন তিনি। মাঝে মধ্যে চলে যাচ্ছেন একবারে খাদের কিনারে। তারপর আবার নিজেকে সামলে নিয়ে নামছেন।
একটানা নামেননি
এভারেস্ট থেকে একটানা নামেননি আন্দ্রেজ। নামার দিন অন্ধকার ঘনিয়ে আসায় তিনি ক্যাম্প ২-তে বিশ্রাম নেন। এই ক্যাম্প প্রায় ৬৪০০ মিটারে অবস্থিত। সেখানেই রাতে থাকেন তিনি।
পরের দিন সকালে সূর্যের দেখা মেলার পরই আবার যাত্রা শুরু করেন আন্দ্রেজ। সে দিনই তিনি নিরাপদে নীচে নেমে আসেন বলে জানানো হয়েছে। আর এরপরই নতুন ইতিহাস তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাহসীকতার জন্য চিরকালই পরিচিত
পোল্যান্ডের পর্বতারোহীরা চিরকালই সাহসী অভিযান করে এসেছেন। ১৯৮০-এর দশকেই রয়েছে এর নজির। এই সময় পোলিশ জার্জি কুকুচকা ও ওয়ান্ডা রুটকিয়েভিচ-এর মতো পর্বতারোহী শীতকালে অভিযানে বেরন। সেই সময় তাঁরা নতুন নতুন আলপাইন রুট আবিষ্কার করেন।
আর সেই দেশের যোগ্য উত্তরসূরি হিসাবে আন্দ্রেজের এই কীর্তি। ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে রইল তাঁর নাম।