
প্রতীকী ছবি সুরাপ্রেমীদের হট ফেভারিট জাপানি হুইস্কি জিম বিম। যা আগামী বছর আর না-ও মিলতে পারে বাজারে! এই হুইস্কি নির্মাতা জানিয়েছে, আমেরিকার কেন্টাকিতে তাদের প্রধান উৎপাদন কেন্দ্রটি ২০২৬ সালে সালে বন্ধ রাখা হবে। গোটা বছর আর উৎপাদনই হবে না এই পরিচিত বার্বন হুইস্কি। প্রস্তুতকারীরা যখন বিশ্বব্যাপী অত্যধিক পরিমাণ চাহিদা নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে, ঠিক তখনই জিম বিম উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
জিম বিম সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৬ সাল জুড়ে উৎপাদন বন্ধ থাকবে এই জাপানি হুইস্কি। এই সময়টি কারখানার উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ করা হবে। কোম্পানির বিবৃতি অনুযায়ী, এই বিরতি তাদের সংস্থাকে বিভিন্ন ভাবে আপগ্রেড ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
বিবৃতিতে জিম বিম সংস্থা বলেছে, 'গ্রাহকদের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে আমরা নিয়মিত ভাবে উৎপাদনের মাত্রা পর্যালোচনা করি এবং সম্প্রতি ২০২৬ সালের উৎপাদন পরিকল্পনা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। কেন্টাকিতে আমাদের উৎপাদনক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে চাহিদা মূল্যায়ন করে নানা পদক্ষেপ করা হবে।'
জিম বিমের মালিকানা রয়েছে জাপানি পানীয় কোম্পানি সানটোরি গ্লোবাল স্পিরিটসের হাতে। যারা কেন্টাকিতে তাদের বিভিন্ন কারখানায় এক হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োগ করেছে। উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কেন্টাকিতে জিম বিমের ভিজিটর সেন্টার খোলা থাকেব।

কোম্পানি আরও জানিয়েছে, উৎপাদন বন্ধের সময়ে তাদের কর্মীদের কীভাবে কাজে লাগানো হবে তা বর্তমানে পর্যালোচনা করা হচ্ছে একইসঙ্গে এই সময়ে কর্মীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনাও চলছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
কেন্টাকির বার্বন উৎপাদকরা বর্তমানে বাড়তি মজুতের কারণে তীব্র চাপের মুখে পড়েছে। গত অক্টোবরে কেন্টাকি ডিস্টিলার্স অ্যাসোসিয়েশন জানায়, রাজ্যজুড়ে গুদামে সংরক্ষিত বার্বন হুইস্কির পরিমাণ রেকর্ড ছাড়িয়ে ১ কোটি ৬০ লক্ষ ব্যারলের বেশি দাঁড়িয়েছে। এসব ব্যারলের উপর রাজ্য সরকার কর আরোপ করে যা উৎপাদকদের খরচ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সংস্থাটির হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছর শুধু এই সংরক্ষণ কর বাবদ ডিস্টিলারিদের প্রায় ৭৫ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তথাকথিত 'লিবারেশন ডে'-র অংশ হিসেবে ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেন। এসব শুল্ক অধিকাংশ দেশের উপর প্রযোজ্য হওয়ায় পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে অনেক দেশই আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করে। যার মধ্যে মদও রয়েছে।
কেন্টাকি ডিস্টিলার্স অ্যাসোসিয়েশন অক্টোবরে জানিয়েছিল, গত এক দশকে বার্বন হুইস্কির যে ব্যাপক সম্প্রসারণ দেখা গিয়েছে, তার বড় অংশই বিশ্ব বাজার ধরার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছিল। তারা দ্রুত শুল্কমুক্ত বাণিজ্যে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এতে চাহিদা স্থিতিশীল হবে এবং উৎপাদকদের উপর চাপও কমবে।
কানাডার সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপোড়েনও বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চলতি বছরের শুরুতে কানাডার বেশিরভাগ প্রদেশ আমেরিকান মদ কেনা বন্ধ করে দিয়েছিল। যা এক ধরনের বয়কট হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। এর ফলে আমেরিকায় ডিস্টিলারিদের রপ্তানি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।