নেপালের পর এবার ফ্রান্স। সরকার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতা নেমে পড়ল রাস্তায়। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রশাসনিক কার্যকলাপের বিরোধিতায় এই প্রতিবাদ। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভালোবাসার শহর প্যারিস। জ্বলছে আগুন। পুলিশের উপর পাথর ছোড়ার অভিযোগ জনতার বিরুদ্ধে।
জনগণের অভিযোগ, সাধারণ নাগরিকদের জন্য কোনও সদর্থক ভূমিকা পালন করেননি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের আর্থিক নীতিও শোচনীয়। দীর্ঘদিন ধরে করুণ পরিস্থিতি সহ্য করছেন তারা। এবার ভেঙেছে ধৈর্য্যের বাঁধ। অবিলম্বে ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ দাবি করছে বিক্ষোভকারীরা।
জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় 'Block Everything' স্লোগান তুলে সকলকে রাস্তায় জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান প্যারিসেরই কিছু প্রগতিশীল সংগঠন। তারপর সেই প্রতিবাদ অনলাইন থেকে ছড়িয়ে পড়ে প্যারিসের রাজপথে। প্ল্যাকার্ড হাতে, স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় নেমে পড়েছে জনতা। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে রোখার জন্য পথে নামে বিশাল সংখ্যক পুলিশ। দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যায়। পুলিশের উপর পাথর ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ।
গোটা প্যারিসের ট্রাফিক ব্যবস্থাও কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। রাস্তার পাশে থাকা ডাস্টবিনগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। দ্রুত অচলাবস্থা কাটানোর চেষ্টায় প্রশাসনের তরফ থেকেও কড়া পদক্ষেপ করার কথা জানানো হয়েছে। শুরু হয়েছে ধরপাকড়। ইতিমধ্যেই প্রায় ২০০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এমনটাই জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে, সোমবার ‘আস্থা’ ভোটে পরাজিত হয়ে ইস্তফা দিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেরু। তাঁর উত্তরসূরি পদে ম্যাক্রোঁ নিজের ঘনিষ্ঠ অনুগামী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুরকে ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। বেরুর মন্ত্রিসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সেবাস্তিয়ান। ফ্রান্সের শিল্পমহলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। চাপে পড়া ফরাসি অর্থনীতি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সহ একাধিক ইস্যুর পাশাপাশি এবার রাজপথে নেমে সরকার বিরোধী আন্দোলনের চাপ নয়া এই প্রধানমন্ত্রী সামলাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান আন্তর্জাতিক মহল।