তাইওয়ানে ভারতীয়দের কাজের সুযোগ বাড়তে পারে। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে অনুযায়ী, তাইওয়ান বিভিন্ন কারখানা, কৃষি, স্বাস্থ্য পরিষেবা সহ বিভিন্ন সেক্টরে অন্তত এক লক্ষ ভারতীয় কর্মী নিয়োগ করতে চাইছে।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই একটি কর্মসংস্থান চুক্তি স্বাক্ষর করবে ভারত ও তাইওয়ান। এই চুক্তির আলোচনা একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ব্লুমবার্গের রিপোর্টে।
কিন্তু তাইওয়ান বাইরে থেকে এত কর্মী নেবে কেন?
বর্তমানে তাইওয়ান জনসংখ্যার সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ নীতির ফলে তাইওয়ানে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। এর ফলে অল্পবয়সী, কর্মী শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা সেখানে অনেক কমে গিয়েছে। এদিকে বয়স্ক, প্রবীণ প্রজন্মের সংখ্যা অনেক বেশি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, ২০২৫ সালের মধ্যে তাইওয়ান একটি 'অতি-বয়স্ক' সমাজে পরিণত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই তকমা তখনই দেওয়া হয়, যখন কোন দেশের মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশেরও বেশি বয়স্ক মানুষ থাকেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই শ্রম চুক্তির ফলে চিনের সঙ্গে তাইওয়ানের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে পারে। বেজিং তাইওয়ানকে তাদের নিজস্ব অঞ্চল বলে দাবি করে। এদিকে তাইওয়ান নিজেদের স্ব-শাসিত দ্বীপ বলে দাবি করে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে তাইওয়ানের যে কোনও আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে চাপে পড়তে পারে চিন।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন যে, ভারত-তাইওয়ানের চাকরি চুক্তি আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইতিমধ্যেই তাইওয়ানের শ্রম মন্ত্রক বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তাইওয়ানে বেকারত্বের হার গত ২০০০ সাল থেকে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। এদিকে সেখানকার অর্থনীতি প্রায় ৭৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। সেটি সচল রাখতে ভারতীয় কর্মীদের সহায়তা নিতে পারে তাইওয়ান। তাইওয়ানের সঙ্গে ভারতের চুক্তি হলে, ভারতীয় কর্মীরা সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সমান হারে বেতন এবং বিমার মতো সুরক্ষাও পাবেন। ফলে ভারতীয় বলে তাঁরা সেখানে সস্তায় কাজ করবেন, এমনটা ভাবারও কোন কারণ নেই।
উল্লেখযোগ্য, এর আগের এক রিপোর্টে জানা যায়, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে চাকরি থেকে বহিষ্কৃত ফিলিস্তিনিদের বদলে ভারত থেকে এক লক্ষ কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করছে ইজরায়েল।