সীমান্তে শয়ে শয়ে তালিবান যোদ্ধা, ভয়ে পাল্টা সেনা মোতায়েন ইসলামাবাদেরকিছুদিন ধরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যে আগুন জ্বলছিল, তা এখন বিশাল রূপ নিয়েছে। আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলার মধ্য দিয়ে যে উত্তেজনা শুরু হয়েছিল তা এখন বাড়ছে। ১৫ হাজার তালিবান যোদ্ধা পাকিস্তানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে, পেশোয়ার এবং কোয়েটা থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনী সেনা মোতায়েন করেছে বলে খবর রয়েছে। সূত্রের বিশ্বাস, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কিছু সেনা আফগান সীমান্তে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে। একই সময়ে আফগান তালিবানরা মীর আলি সীমান্তের কাছে পৌঁছেছে। তবে এখনও গুলি চালানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে আফগানিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক কাবুলে পাকিস্তানি দূতাবাসের ইনচার্জকে তলব করেছে। আফগানিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হাফিজ জিয়া আহমেদ এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং একে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল সৃষ্টির চেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন। এই বিরোধ আরও গভীর হয় যখন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) সম্প্রতি ওয়াজিরিস্তানের মাকিন এলাকায় ৩০ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করে, এর জবাবে পাকিস্তান বিমান হামলা চালিয়ে এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করে যে তারা তাদের এই কাজ সহ্য করবে না।
আফগান তালিবানদের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে এবং দুর্গম এলাকায় লুকিয়ে রাখার ক্ষমতা রয়েছে। তাদের কাছে AK-47, মর্টার, রকেট লঞ্চারের মতো আধুনিক অস্ত্রের বিশাল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া তালিবান যোদ্ধারা পাহাড় ও গুহা থেকে আক্রমণ করতে পারে, যা সম্পর্কে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও অবগত নয়। শেহবাজ শরিফ সরকার ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক সঙ্কট, সিপিইসি প্রকল্পে দেরি এবং বালুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদের মতো সমস্যাগুলির সঙ্গে লড়াই করছে। এসব বিষয় সরকার ও সেনাবাহিনী উভয়কেই দুর্বল করেছে। এখন তালিবানের সঙ্গে সংঘর্ষ এই সঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তালিবানের কৌশল কী?
আফগান তালিবান দীর্ঘদিন ধরে দেখিয়েছে যে তারা কোনও বড় সামরিক শক্তির সামনে মাথা নত করবে না। এটি আমেরিকা এবং রাশিয়ার মতো পরাশক্তিকেও বছরের পর বছর চ্যালেঞ্জ করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত তাদের আফগানিস্তান থেকে চলে যেতে বাধ্য করেছিল। তালিবানদের মোকাবিলা করার মতো সামরিক শক্তি বা অর্থনৈতিক সক্ষমতা পাকিস্তানের নেই। মীর আলি সীমান্তে ক্রমবর্ধমান তৎপরতার কারণে পাকিস্তানও তাদের সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছে। সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে এবং পরিস্থিতি বড় ধরনের সংঘর্ষের ইঙ্গিত দিচ্ছে। উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান এবং তালিবানের মধ্যে এই সংঘর্ষ কোন দিকে অগ্রসর হবে তা দেখার বিষয়।
আফগানিস্তান ও তালিবানের সামরিক শক্তি কী রকম?
তালিবান কতটা শক্তিশালী যে তারা আফগান সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করেছে। তালিবানের রয়েছে প্রায় ৮০ হাজার যোদ্ধা এবং আফগান সেনাবাহিনীর রয়েছে ৫ থেকে ৬ লক্ষ সেনা। এ ছাড়া আফগানিস্তানের একটি বিমান বাহিনী রয়েছে। এমন অনেক তথ্য রয়েছে যা প্রমাণ করে যে তালিবানরা স্থলযুদ্ধে শক্তিশালী। তালিবানের জনশক্তির উৎস হল উপজাতি। এ ছাড়া মৌলবাদী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসাগুলোও তাদের ধারণাকে সমর্থন করছে।