ভারতের মাটিতে একাধিক জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত লস্কর-ই-তইবার শীর্ষ নেতা সইফুল্লা খালিদ নিহত। পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে সে লুকিয়ে ছিল। রবিবার ইন্ডিয়া টুডে টিভি ওয়াকিবহাল সূত্র মারফত এই খবর জানতে পেরেছে। সিন্ধের বাদিন জেলার মাতলি শহরে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা সইফুল্লার উপর হামলা চালায়।
সূত্রের খবর, আবু সইফুল্লাকে সংগঠনের তরফে আগে থেকেই চলাফেরায় সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। তবে এদিন সকালে মাতলি শহরের বাড়ি থেকে বেরনোর পরেই এক চৌমাথায় সে দুষ্কৃতীদের নিশানায় পড়ে। গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
সইফুল্লা খালিদ ভারতে তিনটি বড় জঙ্গি হামলার অন্যতম মূলচক্রী। ২০০৫ সালের বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে হামলা, ২০০৬ সালে নাগপুরে আরএসএস সদর দফতরে হামলা এবং ২০০৮ সালে উত্তরপ্রদেশের রামপুরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলার সঙ্গে তার সরাসরি যোগ ছিল।
এই তিনটি হামলাতেই একাধিক নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়।
‘বিনোদ কুমার’ ছদ্মনামে সাইফুল্লা নেপালে দীর্ঘদিন বসবাস করত। সেখানকার এক স্থানীয় মহিলা নাগমা বানুকে সে বিয়ে করে। নকল পরিচয়ে লুকিয়ে থেকেই সে লস্করের হয়ে কাজ চালিয়ে যেত।
নেপাল থেকেই সে জঙ্গি নিয়োগ এবং রসদ জোগাড়ের কাজ পরিচালনা করত বলে মনে করা হয়। নিজেকে গোপন রেখে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করত।
সম্প্রতি সে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের বাদিন জেলার মাতলি শহরে ঘাঁটি গেড়েছিল। সেখানে সে লস্কর-ই-তইবা ও তার শাখা সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। মূলত জঙ্গি নিয়োগ ও অর্থ সংগ্রহ ছিল তার দায়িত্ব।
এর আগেই কাশ্মীরের শোপিয়ানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লস্করের ‘অপারেশনস কমান্ডার’ শহিদ কুট্টে সহ তিন জঙ্গি নিহত হয়। নিহত অপর দুই জঙ্গি হলেন শোপিয়ানের ভান্ডুনা মেলহুরার বাসিন্দা আদনান শফি এবং পাশের জেলাপুলওয়ামার মুররান এলাকার আহসান উল হক শেখ।
শুকরু কেলার এলাকায় তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গুলির লড়াই হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় দুটি একে সিরিজ রাইফেল, প্রচুর গুলি, গ্রেনেড ও যুদ্ধসাজসরঞ্জাম।
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ কাশ্মীরে লস্করের অপারেশন কমান্ডার কুট্টে বহু তরুণকে ভুল পথে চালিত করেছিল। জঙ্গি দলে নিয়োগের পাশাপাশি সে বহু নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল।