একটার পর একটা নিস্প্রাণ দেহ বেরোচ্ছে, আর কান্নায়-আর্তনাদে ভারী হচ্ছে ভুমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। কিন্তু এখনও কী বহুতল চাপা পড়ে থাকা মানুষেরা বেঁচে থাকবেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় পর্যন্ত ওই অবস্থায় বেঁচে থাকতে পারে। তবে নির্ভর করে আঘাত, কীভাবে আটকা পড়েছে এবং আবহাওয়ার অবস্থার ওপর।
সারাবিশ্বেরর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা উদ্ধারকারী দলগুলি তুরস্ক এবং সিরিয়ার স্থানীয় জরুরী কর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এই সপ্তাহের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে বিপর্যস্তদের সন্ধান করছেন সকলে মিলেই। হাজার হাজার মানুষ মারা গেছেন।
দুর্যোগের প্রথম ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেশিরভাগ উদ্ধার হয়। তারপর থেকেই আটকে পড়াদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়। পাথর বা অন্যান্য ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়লে আহত ব্যক্তির বাঁচার সম্ভাবনা কমে যায়।
অন্যদিকে শ্বাস নেওয়ার জন্য বাতাস এবং জল থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিরিয়া ও তুরস্কে শীতকালীন পরিস্থিতি উদ্ধার অভিযানকে ব্যাহত করেছে এবং তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেছে। ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের জরুরী ও দুর্যোগ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ জ্যারন লি বলেছেন, "সাধারণত, পঞ্চম থেকে সপ্তম দিনের পরে বেঁচে যাওয়া বিরল ঘটনা। সাতদিন পরও বেঁচে থাকা সাধারণত বিরল।
যাদের শরীরে আঘাত রয়েছে, বা আগে কোনও ট্রমার কারণে অসুস্থ ছিলেন, তাঁদের বাঁচার সম্ভাবনাও অনেকটাই কম। তাঁদের ক্ষেত্রে একঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হতে পারে। যাদের স্বাস্থ্য ওষুধের উপর নির্ভর করে, তারাও মারাত্মক সম্ভাবনার মুখোমুখি হয়।
২০১১ সালের জাপানের ভূমিকম্প এবং সুনামির পর এক কিশোর এবং তার ৮০ বছর বয়সী ঠাকুমাকে তাঁদের সমতল বাড়িতে নদিন আটকে থাকার পর জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পোর্ট-অ-প্রিন্সে ১৬ বছর বয়সী হাইতিয়ান মেয়েকে ১৫ দিন পর ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
মানসিক অবস্থাও বেঁচে থাকাকে প্রভাবিত করতে পারে। মৃতদেহের পাশে আটকে পড়া লোকেরা, যাদের অন্য জীবিত বা উদ্ধারকারীদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই, তাঁরা আশা ছেড়ে দিতে পারেন। যখন আটকে থাকা ব্যক্তি জানতে পারেন, যে তাঁর পরিবারে আর কেউ বেঁচে নেই, সেক্ষেত্রেও তাঁরও মৃত্যু হতে পারে।
আরও পড়ুন-'বাঁচাও, সারাজীবন দাসী হয়ে থাকব,' সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া কিশোরীর আর্তনাদ VIRAL