Ukraine Drone Attack Russia 2025: ইউক্রেনের 'অপারেশন স্পাইডার্স ওয়েব'—দ্রুতগতির FPV ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার চারটি কৌশলগত বিমানঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলা চালানো হল। রাশিয়ার বিলিয়ন ডলারের বোমারু বিমান পুড়ে ছাই। রাশিয়ার আকাশ-ক্ষমতায় নেমে এল বিপর্যয়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইতিহাসের অন্যতম বড় ড্রোন হামলা
ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিস (SBU) ‘অপারেশন স্পাইডার্স ওয়েব’ নামে একটি বিশাল ড্রোন অভিযান শুরু করেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এই অভিযানে তারা রাশিয়ার চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটিতে একযোগে হামলা চালিয়েছে। এর ফলে ধ্বংস হয়েছে রাশিয়ার বহু কৌশলগত জেট ও বোমারু বিমান।
যেসব রাশিয়ান বিমানঘাঁটিতে হামলা হয়েছে:
বেলায়া এয়ার বেস (Belaya Air Base) –
সাইবেরিয়ায় অবস্থিত এই ঘাঁটিতে রয়েছে রাশিয়ার Tu-95MS, Tu-160 ও Tu-22M3 বোমারু বিমান। এদের সাথে যুক্ত Kh-101, Kh-555 ও Kh-55 ধরনের ক্রুজ মিসাইল। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়—ঘাঁটিতে একের পর এক রাশিয়ান পারমাণবিক ও কৌশলগত বোমারু বিমান জ্বলছে, ঘন কালো ধোঁয়া উঠছে আকাশে।
ওলেনিয়া এয়ার বেস (Olenya Air Base) –
আর্কটিকে অবস্থিত এই ঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষতির খবর মিলেছে।
ইভানোভো এয়ার বেস (Ivanovo Air Base) –
মস্কোর উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই ঘাঁটিতেও হামলা হয়েছে।
দিয়াগিলেভো এয়ার বেস (Dyagilevo Air Base) –
রাজধানী মস্কোর দক্ষিণে অবস্থিত এই ঘাঁটি রাশিয়ার অন্যতম সামরিক ঘাঁটি, সেখানেও ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে।
‘অপারেশন’-এর পদ্ধতি
এই গোপন অভিযানে ইউক্রেন প্রথমে FPV ড্রোন রাশিয়ায় পাচার করে, যেগুলি রাখা হয় মোবাইল কাঠের কেবিনে, ট্রাকের উপর। হামলার সময় দূরনিয়ন্ত্রিতভাবে এই কাঠের কেবিনের ছাদ খোলা হয় এবং সেখান থেকেই ড্রোনগুলো উড়ে গিয়েই বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে। ইউক্রেন জানিয়েছে, এই হামলায় প্রায় $2 বিলিয়ন মূল্যের সামরিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাশিয়ার।
যেসব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হয়েছে:
TU-95 (Bear): বিশাল কৌশলগত বোমারু বিমান
TU-22M3: সুপারসনিক, দীর্ঘপাল্লার বোমারু বিমান
A-50: আকাশ পর্যবেক্ষণ ও কন্ট্রোল বিমান (AWACS)
ইউক্রেনের ড্রোন শক্তি ও উৎপাদন
ইউক্রেন বর্তমানে মাসে ২ লক্ষ FPV ড্রোন উৎপাদন করছে।
প্রতি ড্রোনের খরচ মাত্র $1,200 হলেও এরা ধ্বংস করছে মিলিয়ন ডলারের রাশিয়ান যুদ্ধবিমান।
ইউক্রেন এখন দেশের মধ্যেই অধিকাংশ যন্ত্রাংশ উৎপাদন করছে, বিদেশনির্ভরতা কমছে।
ফলাফল ও তাৎপর্য
TU-95 বা TU-22M3 এর মতো বিমান রাশিয়া এখন আর তৈরি করতে পারবে না।
রাশিয়ার বায়ুসেনার কৌশলগত সক্ষমতায় ভয়ঙ্কর ধাক্কা।
যুদ্ধের নতুন যুগ—সস্তা ড্রোন দিয়ে বহু দূরের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা সম্ভব।
এই হামলা হয়েছে ঠিক তার আগেই, যখন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। ইউক্রেনের এই স্পষ্ট বার্তা— তারা সমঝোতায় নয়, যুদ্ধক্ষেত্রেই প্রভাব তৈরি করতে চায়।