কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর নতুন করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা ও চিন দুই দেশই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমেরিকা বলছে, তারা ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে এবং 'আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের' জন্য কাজ করতে উভয় পক্ষকেই উৎসাহ দিচ্ছে। অন্যদিকে চিন নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য দুই দেশকেই সংযম দেখাতে অনুরোধ করেছে।
রবিবার এক বিবৃতিতে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের সঙ্গেই একাধিক স্তরে যোগাযোগ রেখে চলেছে। একটি ইমেল বিবৃতিতে তারা জানায়, 'এই পরিস্থিতি ক্রমশ পরিবর্তিত হচ্ছে। আমরা খুব সতর্কভাবে নজর রাখছি। আমরা ভারত ও পাকিস্তানের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমরা সব পক্ষকে দায়িত্বপূর্ণ সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।'
আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র আরও বলেন, 'আমরা ভারতের পাশে রয়েছি এবং পাহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।' প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও সম্প্রতি একই ধরনের মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল ভারতীয় নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়। ওই হামলায় ২৬ জনের বেশি প্রাণহানি ঘটে। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে এই হামলার জন্য দায়ী করে। তবে পাকিস্তান দায় অস্বীকার করে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতি অনুযায়ী, আমেরিকা প্রকাশ্যে ভারতের পাশে দাঁড়ালেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও সমালোচনা করেনি। বর্তমানে ভারতের গুরুত্ব আমেরিকার কাছে অনেক বেড়েছে কারণ তারা চিনের প্রভাব মোকাবিলায় এশিয়ায় ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে। যদিও পাকিস্তান এখনও আমেরিকার মিত্র, কিন্তু আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার ২০২১ সালের প্রত্যাহারের পর থেকে পাকিস্তানের গুরুত্ব কিছুটা কমেছে।
এদিকে চিনও এই ঘটনার ওপর কড়া নজর রাখছে। 'গ্লোবাল টাইমস'-এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য এবং বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই রোববার পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
ওই ফোনালাপে ওয়াং ই জানান, 'কাশ্মীর অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা আমরা মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত শুরুর পক্ষে।'
চিনের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমরা আশা করি দুই দেশই সংযম দেখাবে, একে অপরের দিকে এগিয়ে আসবে এবং উত্তেজনা প্রশমনের জন্য কাজ করবে।'
ওয়াং ইর বক্তব্যে স্পষ্ট, চিন কোনও পক্ষ নেয়নি। তারা উভয় দেশের মধ্যেই শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার জন্য চিন উভয় দেশকেই অনুপ্রাণিত করছে।