নিউইয়র্কে পারমাণবিক হামলার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) একটি বিশাল মহড়া শুরু করেছে। মহড়াটি ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এই সময়কালে সামরিক বিমান, বিশেষ সরঞ্জাম এবং কর্মীরা পারমাণবিক হুমকির ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রস্তুতি নেবে।
জননিরাপত্তার উদ্দেশ্যে মহড়া
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুসারে, এফবিআই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই মহড়ার উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কোনও হুমকি নেই। ২০১২ সাল থেকে প্রতি বছরই যুক্তরাষ্ট্রে দু’বার এই ধরনের মহড়া আয়োজিত হয়ে আসছে।
মহড়ার উদ্দেশ্য ও স্থান
মূলত, এই মহড়ার উদ্দেশ্য হল তেজস্ক্রিয় হামলার ক্ষেত্রে নাগরিকদের সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য বজায় রাখা, ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ত্রাণ সরবরাহ করা এবং প্রাথমিক পরিষেবাগুলি পুনরুদ্ধার করা। মহড়াটি স্ট্র্যাটন এয়ার ন্যাশনাল গার্ড বেস, আলবানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সারাটোগা কাউন্টির উত্তরাংশে পরিচালিত হচ্ছে।
রাশিয়ার সতর্কবার্তা এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা
মহড়াটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোকে ‘লাল রেখা’ অতিক্রম না করার কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। পুতিন জানিয়েছেন, যদি পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপ চালিয়ে যায়, তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে।
তবে এফবিআই-এর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার সারাহ রুয়ান জানিয়েছেন, এই মহড়ার আয়োজন বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নয়। এর পরিকল্পনা ২০২৪ সালেই শুরু হয়েছিল।
প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা
এটি নতুন কোনও আয়োজন নয়। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে, নিউ জার্সি, ডেলাওয়ার এবং আইডাহোর ন্যাশনাল গার্ড, এফবিআই-এর সঙ্গে একত্রে একটি পারমাণবিক এবং রেডিওলজিক্যাল হুমকি মোকাবেলার মহড়া পরিচালনা করেছিল। একই বছর অক্টোবরে, নর্থ ডাকোটায় "গ্লোবাল থান্ডার ২৫" নামে একটি অনুশীলনও অনুষ্ঠিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল পারমাণবিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
জাতীয় প্রস্তুতির প্রতিফলন
এই মহড়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক হুমকি মোকাবেলার জন্য নিজের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা পর্যালোচনা করছে। পারমাণবিক বা রেডিওলজিক্যাল হামলার মতো গুরুতর পরিস্থিতিতে দ্রুত এবং কার্যকর সুরক্ষা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিত করাই এর প্রধান লক্ষ্য।