ভ্লাদিমির পুতিনরাশিয়ার থেকে তেল কেনা নিয়ে আমেরিকা যখন ভারতকে রীতিমতো হুমকি দিচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মোটা ট্যারিফ চাপিয়ে শাস্তি দিচ্ছেন,তখন 'আজতক'-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে আমেরিকার দ্বিচারিতার পর্দাফাঁস করে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম ভারতে এলেন পুতিন। India Today Group-কে ওয়ার্ল্ড এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউতে বললেন, 'কোনও চাপের কাছেই মাথা হেঁট করার পাত্র নন প্রধামন্ত্রী মোদী।' ভারতের উপর ট্রাম্পের ট্যারিফ বসানোর ইস্যুতে মোদীর দৃঢ়় ব্যক্তিত্বের প্রশংসা করলেন।
বিশ্ব আজ ভারতকে এক শক্তিশালী দেশ হিসেবে দেখছে
আজতক-এর ম্যানেজিং এডিটর অঞ্জনা ওম কাশ্যপ ও ইন্ডিয়া টুডে-র ফরেন অ্যাফেয়ার্সএডিটর গীতা মোহনকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়ে বড় কথা বললেন পুতিন। একাধিক আন্তর্জাতিক ইস্যুতে খোলামেলা মতামত ব্যক্ত করেন। পুতিনের কথায়, 'বিশ্ব আজ ভারতকে এক শক্তিশালী দেশ হিসেবে দেখছে। ভারত তার নেতৃত্ব নিয়ে গর্ব করতে পারে।'
ট্রাম্পের নিজের নীতি আছে, আমাদের নিজের নীতি আছে
মেড ইন ইন্ডিয়া ও মেক ইন রাশিয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পুতিন বলেন, 'না আমি, না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেউ কারও চাপে সিদ্ধান্ত নিই না। আমরা কোনও দেশের বিরুদ্ধে কাজ করি না। ট্রাম্পের নিজের নীতি আছে, আমাদের নিজের নীতি আছে। রাশিয়া ও ভারত নিজেদের পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করতে চায়, কারও ক্ষতি করতে চায় না। আমার মনে হয় এই নীতি বিশ্বের কাছে সম্মান পাওয়ার যোগ্য।' অঞ্জনা ওম কাশ্যপ ট্রাম্পের সেই মন্তব্যের উল্লেখ করেন যেখানে তিনি বলেছিলেন, 'যদি ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনে, তাহলে তারা যুদ্ধকে সমর্থন করছে।'
জবাবে পুতিন বলেন, 'আমি কখনও নেতাদের চরিত্র বিচার করি না। এটা তাদের দেশের নাগরিকদের অধিকার, যারা তাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছেন। আমেরিকা নিজেরাও রাশিয়া থেকে পরমাণু শক্তি ও ইউরেনিয়াম কেনে। তাহলে ভারত কিনলে সমস্যা কোথায়? এই বিষয়টি নিয়ে আমেরিকার ভাবা উচিত।'
ট্রাম্পের ‘ট্যারিফ নীতি’ সম্পর্কে পুতিন
গীতা মোহন জানতে চান, ট্রাম্পের শুল্কনীতি যেভাবে বিশ্ব বাণিজ্যে চাপ তৈরি করছে, ভারত ও রাশিয়া কীভাবে এর মোকাবিলা করবে? উত্তরে পুতিন বলেন, 'ট্যারিফকে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করা তাঁর ব্যক্তিগত নীতি। তাঁদের উপদেষ্টারা মনে করেন এতে আমেরিকার সুবিধা হবে। কিন্তু আমাদের অর্থনীতিবিদদের মতে, এ ধরনের নীতি ঝুঁকিপূর্ণ। রাশিয়া কখনও এমন পন্থা গ্রহণ করেনি, আমরা একটি উন্মুক্ত অর্থনীতি বিশ্বাস করি। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) যে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেই নিয়মগুলির সংশোধন দরকার।'