বাংলাদেশের অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে ফোনের ওপার থেকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন, এই অভিযোগে ইতিমধ্যে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে।
বাংলাদেশ জুড়েই এখন আলোচনার কেন্দ্রে ডা. মুরাদ হাসান। অশালীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দেওয়ায় ইতিমধ্যে তাঁকে জামালপুর জেলা আওয়ামি লিগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতী মুরাদের একটি কথোপকথনের অডিও ক্লিপ (সত্যতা যাচাই করেনি আজতক বাংলা) ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতেই দাবি করা হচ্ছে, মুরাদের ফোনের ওপারে ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি। ফোনে নাকি নায়িকাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন ডা. মুরাদ হাসান। মাহিকে ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
ফাঁস হওয়া ওই কথোপকথনে তথ্য অনুযায়ী মুরাদ সেদেশের অভিনেতা ইমনকেই ফোন করেছিলেন। করে জানতে চান যে সে কোথায় আছে এবং কে কে রয়েছে তাঁর সঙ্গে। জবাবে ইমন জানান যে 'ব্লাড' ছবির ব্যাপারে মিটিং করছেন তিনি। সঙ্গে অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি রয়েছেন। শোনামাত্রই ফোনটি মাহিকে দেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তাই করেন ইমন। এরপরেই মাহির সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। তারপর ফের ইমনকে নির্দেশ দেন সে যেন এক্ষুণি হোটেল সোনারগাঁওয়ে মাহিকে নিয়ে আসেন। দরকার হলে যেন ঘাড় ধরে নিয়ে আসে। অডিওতে শোনা গিয়েছে বাংলাদেশি নায়ক বলছেন, 'হ্যাঁ, ভাই আসছি। দেখছি ভাই'। দাবি করা হচ্ছে এই অডিও ক্লিপটি দু'বছর আগের।
ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে ইমন ও মাহির কথোপকথনের সেই অডিও ক্লিপ গত রবিবার রাত থেকে ছড়িয়ে গেছে অনলাইনে। সোমবার সকালে অভিনেতা ইমন সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন অডিওটি আসল।
তবে মাহি কী বলেন সেদিকেই নজর ছিল সকলের। অবশেষে মুখ খুলেছেন ঢালিউড নায়িকাও। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে সৌদি আরবে আছেন মাহি। সেখান থেকেই ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেন, সেদিন ঘটনা ঘটার পর আমি বেশ বিব্রত ছিলাম। নিজের আত্মসম্মানে কতটুকু আঘাত লেগেছে সেটি আমি আর আমার আল্লাহ জানেন। আজকেও আমি ভীষণ লজ্জিত নিজের কাছেও সেই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে।
মাহি আরও বলেন, আপনারা নিজে থেকে একবার চিন্তা করে দেখবেন আসলে এই ভাষার প্রতি উত্তর আমি কী দিতাম সেই সময়? বলার ভাষা আমার সেদিন ছিল না। আমি নিজের মতো করে উত্তর দিয়ে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিলাম সেদিন। এটা ঠিক দুই বছর আগের ঘটনা ছিল। এর সঙ্গেই মাহির যোগ করেন, আমি বরাবরের মতো সেদিনও বলেছিলাম, আল্লাহ আমি কষ্ট পেয়েছি। যার মাধ্যমে কষ্ট পেয়েছি কোনো না কোনোভাবে তিনি তার ফল পেয়েছেন। এটা আমার কাছে প্রমাণিত।
যেভাবে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে কৃতজ্ঞতা জানাতে চান মাহি। তাঁর কথায়, ‘ওমরাহ থেকে ফিরেই আমাদের মমতাময়ী মা (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)’র সঙ্গে ৩০ সেকেন্ডের জন্য হলেও দেখা করতে চাই। অনেক কিছু বলার আছে। এই মনোবাসনা নিয়েই আমি মক্কা ত্যাগ করবো। আমার বিশ্বাস এই চাওয়া ব্যর্থ হবে না।’
প্রসঙ্গত গত সেপ্টেম্বরেই নতুন জীবন শুরু করেছেন মাহিয়া মাহি। বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় নায়িকার চলতি বছর মে মাসেই বিবাহবিচ্ছেদ হয়। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই এক ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান নায়িকা। সেপ্টেম্বরেই কামরুজ্জামান সরকার রাকিবের সঙ্গে নিকাহ সেরেছিলেন মাহি।
ভালোবেসে সিলেটের ব্যবসায়ী মাহমুদ পারভেজ অপুকে ২০১৬ সালে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু মাত্র ৫ বছরেই ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক।
২০১২ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজনায় ‘ভালোবাসার রঙ’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক ঘটে রাজশাহীর মেয়ে মাহির।