বর্তমানে বিশ্ব বাজারে মোট যত পরিমাণ ইলিশ ওঠে, তার ৮৬ শতাংশই নাকি আসে বাংলাদেশ থেকে। এমনটাই জানা গিয়েছে ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণে। পাঁচ বছর আগে বিশ্বের মোট ইলিশের জোগানের ৬৫ শতাংশই আসত বাংলাদেশ থেকে।
অর্থাৎ, বিগত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাংলাদেশের মধ্যে কোথায় সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যায় জানেন?
বিগত কয়েক দশক ধরে সে বাংলাদেশে জালে ধরা পড়া লক্ষ লক্ষ টন ইলিশের অধিকাংশ মেলে চট্টগ্রামের একটি জেলা থেকে। শুধু তাই নয়, এখানকার ইলিশের স্বাদের নাকি তুলনা হয় না! সেই জন্যই এই জেলাকে সে দেশের মানুষ ‘ইলিশের বাড়ি’ বলেই চেনেন।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের এই জেলাতেই পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে ফি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়ে মৎস্যজীবীদের জালে। অনেকে তাই ঠাট্টা করে বলেন, ‘এখানে নাকি নদীর জলে হাত ডুবালেই ইলিশ ধরা যায়!’
চট্টগ্রামের চাঁদপুর জেলার কথা বলছি। এই জেলা ইলিশ উৎপাদনের জন্য সে দেশে ব্যাপক ভাবে সমাদৃত। তবে বিগত কয়েক বছরে এই জেলায় ইলিশের আহরণ কমেছে। সাম্প্রতিক কালে ইলিশ উৎপাদনে বরিশালের ভোলা জেলা, বরগুনা, পটুয়াখালীর নাম উপরে উঠে এসেছে। কারণ, বিগত কয়েক বছরে এই জেলাগুলি থেকে সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া গিয়েছে।
বরিশালের প্রধান তিনটি নদী বিষখালী, বুড়িশ্বর (পায়রা) ও বলেশ্বর নদী থেকে বর্তমানে দেশে পাওয়া ইলিশের মধ্যে প্রায় ২০-২৫ শতাংশই আহরণ করা হয়। প্রতি বছর বরিশাল জেলা থেকে দেড় থেকে দুই লক্ষ মেট্রিক টনের মতো ইলিশ ধরা পড়া মৎস্যজীবীদের জালে।
ইদানীংকালে চট্টগ্রামের চাঁদপুরে থেকে বছরে ষাট থেকে সত্তর হাজার মেট্রিক টনের মতো ইলিশ ধরা পড়া মৎস্যজীবীদের জালে। ইলিশ আহরণে বর্তমানে চট্টগ্রামের চাঁদপুরের স্থান তিন থেকে পাঁচের মধ্যে ঘোরাফেরা করে।
তবে মৎস্য বিশেষজ্ঞ এবং ভোজনরসিকদের মতে, বরিশালের বিষখালী, বুড়িশ্বর (পায়রা) ও বলেশ্বর নদীর ইলিশের তুলনায় চাঁদপুরে মৎস্যজীবীদের জালে ওঠা পদ্মা, মেঘনার ইলিশের স্বাদ ঢের ভাল। তাই চট্টগ্রামের চাঁদপুরকে ‘ইলিশের বাড়ি’ বলা নিয়ে আপত্তি নেই বর্তমানে ইলিশ আহরণে বাংলাদেশের শীর্ষে থাকা বরিশালের বাসিন্দাদের।