নিরাপদ প্রজননে গত অক্টোবরের ২২ দিন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল ইলিশ শিকার, আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ ও কেনা-বেচা। এই সময়ে বাংলাদেশের নদ-নদী ও মোহনায় ৫১. ৭ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে বলে সেদেশের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে।
বাংলাদেশের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতে এটাই এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ডিম ছাড়ার রেকর্ড। ইলিশ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, প্রথমে মনে হয়েছিল যে ডিম ছাড়ার হার কম হবে। কিন্তু ভোলা, চাঁদপুর ও শরীয়তপুরসহ মোট ১০টি পয়েন্টে এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। তাতেই আশা করা হচ্ছে এই মরসুমে ইলিশের উৎপাদন ৬ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে।
এদিকে ইলিশ রফতানির শেষদিন বাংলাদেশ থেকে আরও ২৯ মেট্রিক টন ইলিশ ঢুকেছে ভারতে। ফলে আরও কিছুটা দিন বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ পেতে পারবেন পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা।
ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ থাকলেও দুর্গোৎসব উপলক্ষে এবার ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সরকার। সেইমতো ১১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়।
পুজোর আগে ইলিশ বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাঠানো হলেও চাহিদা মেটেনি। প্রথম দফায় ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ইলিশ রফতানি হয় মাত্র ১ হাজার ১৩৭ মেট্রিক টন।
তবে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, বিক্রি ও বাজারজাত নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ হয়ে যায়।
পরে ২৬ অক্টোবর ভারতে ইলিশ রফতানির সময় আরও বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক। সেই বিজ্ঞপ্তির পর ২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯৫ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানি করা হয় ভারতে।
প্রতি কেজি ইলিশের রফতানি মূল্য ১০ মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের কাস্টমস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইলিশের এসব চালান রফতানি হচ্ছে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে।
দেশে উৎপাদন ঘাটতি থাকায় ২০১২ সাল থেকে ইলিশ রফতানি বন্ধ করে বাংলাদেশে সরকার। পরবর্তীতে ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর দুর্গা পুজোর আগে ভারতে ইলিশ ররফতানির অনুমতি দেয় হাসিনা সরকার।