রুপোলি শস্যের জন্য এদেশে বর্ষাই সেরা মরসুম। রাজ্যবাসীর পাতে ইলিশ বলতে বর্ষাকালই একমাত্র ভরসা! বাজারে যেটুকু ইলিশ দেখা যায় তা ওই বর্ষা বা পুজোর সময়টুকুতে। তবে প্রতিবেশী বাংলাদেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ছাড়াও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ভালোই ইলিশ পাওয়া যায়।
আর সেই ইলিশ উৎপাদনেই এবার রেকর্ড গড়ার পথে বাংলাদেশ। ইলিশ উৎপাদনের সর্বশেষ তথ্যে অনুযায়ী, জাতীয় মাছ উৎপাদনে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ।
এর আগেই অবশ্য ইলিশ উৎপাদনে নজির গড়ার রেকর্ড রয়েছে শেখ হাসিনার দেশের। এ বারে ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়াতে নজর দিয়েছিলেন খোদ বাংলাশেদের প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে হাসিনা নিজেই এ সংক্রান্ত খোঁজখবর করেন এবং নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, চলতি বছরে ইলিশের প্রধান প্রজনন মরশুমে ৫১.২ শতাংশ মা-ইলিশ সম্পূর্ণ ভাবে ডিম দিয়েছে, যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রজনন মরশুমকে সামনে রেখে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ছিল বাংলাদেশে । এ সময় নদীতে কড়া পাহাড়া ছিল কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, র্যাব, পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক ও মৎস্য দফতরের কর্মকর্তাদের।
গত বছর বাংলাদেশে ইলিশের প্রজননে সফলতা ছিল ৪৮ .৯২ শতাংশ। কিন্তু এবার ৫১ শতাংশের বেশি মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। এতে ভবিষ্যতে সাড়ে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইলিশ উৎপাদনের প্রত্যাশিত এ হার গত দুই বছরের তুলনায় বেশি।
বিএফআরআই বলেছে, যেহেতু এ বছর ইলিশের প্রজনন সফলতা রেকর্ড গড়েছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই আগামী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টন। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেটা বেড়ে হয়েছিল ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন।
বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ। আর এই ইলিশ শব্দটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে চোখের সামনে ভেসে ওঠে পদ্মার রুপালি ইলিশের চকচকে ছবি। রসনায় ও পুষ্টিগুণে ভরপুর ইলিশ বাংলাদেশের মৎস্যক্ষেত্রের অন্যতম ফসল।