সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী হিসাবে রাফিয়াত রশিদ মিথিলা নামটির সঙ্গে এপার বাংলার মানুষ পরিচিত। তবে মিথিলার নিজস্ব পরিচয় রয়েছে। তিনি বাংলাদেশর জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী। ২০১৯ সালে দু'জনে বিয়ে করেন।
মিথিলা শুধু অভিনেত্রী ও সমাজকর্মীই নন, তিনি বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার এবং সুরকার। তিনি গান শিখেছেন হিন্দোল সংগীত অ্যাকাডেমি থেকে, নাচ শিখেছেন বেণুকা ললিতকলা অ্যাকাডেমি থেকে, আর অভিনয় শিখেছেন লোক নাট্যদলের চিলড্রেনস থিয়েটারে। ভরতনাট্যম, কত্থক ও মণিপুরী নাচের উপর প্রশিক্ষণ নেওয়া রয়েছে মিথিলার। পাশাপাশি তাঁর অ্যাকাডেমিক কেরিয়ারও যথেষ্ট ঈর্ষণীয়। এককথায় সর্বগুণ সম্পন্না বলা চলে তাঁকে।
মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করা মিথিলা পরবর্তীতে বিভিন্ন টিভি ধারাবাহিক, টেলিফিল্ম, মিউজিক অ্যালবামে অভিনয় করেন। সম্প্রতি ঢালিউডে অনন্য মামুন পরিচালিত ‘অমানুষ’ সিনেমাতেও কাজ করেছেন মিথিলা। তবে ঢাকা নয়, আপাতত তিনি ভারতে।
টলিউডে রাজর্ষি দে’র পরিচালনায় ‘মায়া' দিয়ে হাতেখড়ি হচ্ছে মিথিলার। রাজর্ষি দে পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এইরমধ্যে টলিউডে দ্বিতীয় ছবি পেয়ে গেলেন সৃজিত ঘরণী। শোনা যাচ্ছে রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আ রিভার ইন হ্যাভেন’সিনেমায় অভিনয় করবেন তিনি।
সম্পর্কের টানাপোড়েনের গল্প বলবে এই ছবি। ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, বিশ্বাস, ধোঁকা এবং সবশেষে পুনর্মিলন। সৃজিত পত্নী মিথিলাকে এই ছবিতে দেখা যাবে ববি চক্রবর্তীর বিপরীতে। স্বপন আর বিশাখা মধ্যবর্তী পরিবারের দম্পতি। কিন্তু বিয়ের বহু বছর পরেও তাঁদের কোনও সন্তান নেই। আর এই কারণে স্বপন অণবরত দোষ দেয় বিশাখাকে। রেগে গিয়ে গায়ে হাতও তোলে। কিন্তু ছেড়ে যেতে পারে না ভালোবাসার কারণে। তাঁরা বারাণসী আসেন ঠাকুরের আশীর্বাদ নিতে। আর সেসময়তেই দেখা হয় বিশাখার প্রাক্তন প্রেমিক ও শিক্ষক কৌশিকের সঙ্গে।
জানা যাচ্ছে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে বারাণসীতে শুরু হবে শুটিং। তার আগেই মিথিলা শেষ করবেন ‘মায়া’র ডাবিং। কেন্দ্রীয় চরিত্রে মিথিলা। তার সঙ্গে অভিনয় করার কথা রুমা গুহঠাকুরতা-র মেয়ে শ্রমণা চক্রবর্তী, সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, চান্দ্রেয়ী ঘোষ, অমৃতা চট্টোপাধ্যায়, তন্নিষ্ঠা বিশ্বাস প্রমুখ। সিনেমাটির গল্প লিখেছেন রিঙ্গো নিজেই। পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের দায়িত্বও তিনিই সামলাবেন।
‘মায়া’র শুটিং শেষ করে মিথিলা মাঝে গিয়েছিলেন মুম্বই। তখনি খবর রটে তিনি এবার বলউডে পা বাড়াচ্ছেন। পরে জানা যায় স্বামী সৃজিতের জন্যই তাঁর মুম্বই গমন। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় বেশ কিছুদিন ধরেই মুম্বইয়ে রয়েছেন। কারণ, তাঁর নতুন হিন্দি ছবি 'শাবাশ মিঠু'র কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই ব্যস্ততার মাঝেই স্ত্রী রফিয়াত রশিদ মিথিলা ও কন্য়া আইরাকে নিয়ে মুম্বই ঘোরেন সৃজিত। সেখান থেকে মিথিলা তার কন্যাকে নিয়ে ২৭ অগাস্ট ফিরেছেন কলকাতায়। তার পরেই সামনে আসে ‘আ রিভার ইন হ্যাভেন’-এর কথা।
বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় লকডাউনের পুরো সময়টাই ঢাকায় ছিলেন মিথিলা। জুলাই মাসেই সকন্যা কলকাতায় এসেছেন তিনি। সংসার তো বটেই, একমাত্র সন্তানের স্কুলও এখন এখানে। বাংলাদেশের বৃহৎ এনজিও ব্র্যাকের কর্মকর্তা মিথিলা, তার কাজ দেশে দেশে ওড়াউড়ির। বছরে অন্তত চার-ছ’বার তাকে যেতে হয় আফ্রিকায়। ফলে তার জন্য ঢাকা যেমন, হনুলুলু তেমন!তবে আপাতত থিতু হয়েছেন ভারতেই। সুযোগ পেলে টলিউডের পাশাপাশি ঢালিউডের কাজও চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন মিথিলা।
ঢাকার ইন্ডাস্ট্রিও ছাড়ছেন না মেধাবী মিথিলা। জানিয়েছেন এরমধ্যে বেশ কিছু ওয়েব সিরিজের কথা চলছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ঢাকায় ফিরলে সেগুলোও করবেন। তবে বাস্তবতার নিরিখে এখন তার মূল শেকড় কলকাতাতেই গাঁথা।