 Rohingya refugees
Rohingya refugeesরোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে ল্যাজে গোবরে অবস্থা বাংলাদেশ সকারের। মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই ১১ লক্ষ শরাণার্থীদের বাসস্থান ও খরচ জোগান দিতে গিয়ে একাবের নাজেহাল ঢাকা। আর এর মাঝেই কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করে দিল বাংলাদেশ সরকার। তার অংশ হিসাবেই ১ হাজার ৬৪২জন রোহিঙ্গার একটি দল শুক্রবার নোয়াখালীর ভাসানচরে পা রেখেছে।
এদিকে শুক্রবারই আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং দেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, পর্যটন ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই সরকার তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যদিও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে। এই বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে শুকনো আশ্বাস ছাড়া এখনও পর্যন্ত কিছু জোটেনি। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মানবিক কারণে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের এভাবে ভাসানচরে পাঠান নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চ সমালোচনার ঝড় তুলেছে। যদিও নিজেদের অবস্থানে অনড় বাংলাদেশ সরকার। উখিয়ার আশ্রয়শিবির থেকে গত বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের বাসে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছিল। চট্টগ্রাম থেকে মোট সাতটি জাহাজে তাদের শুক্রবার ভাসানচরে পাঠান হয়।
জানা যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার ২৩১২ কোটি টাকা খরচ করে  ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বসবাসের ব্যবস্থা করেছে। শুক্রবারই রোহিঙ্গাদের প্রথম দল সেই চরে পৌঁছেছে। চট্টগ্রামের বোট ক্লাব, আরআরবি জেটি ও কোস্টগার্ডের জেটি থেকে জাহাজগুলো ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা কারণে দুই বছর আগেই  তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। ইতিমধ্যে  তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার ভাসানচরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলকে ভাসানচরে পনর্বাসন স্থল দেখার জন্য পাঠায় ঢাকা। তারা ফেরার পর  রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসান চরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে বলে জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগ থেকে নিজেদের দূরত্ব বজায় রেখেছে। রাষ্ট্রসংঘ ইতিমধ্যে বিবৃতি দিয়ে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে নেওয়ার যে পরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকার করেছে, তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক এই সংগঠনের কোনও যোগ নেই।