scorecardresearch
 

'নন্দীগ্রাম-কাঁথিতে দলবিরোধী কাজ,' শিশির অধিকারীকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মমতার

বুধবার সৌগত রায়কে পাঠান শুভেন্দুর হোয়াটসঅ্যাপের পরেই নন্দীগ্রামের বিধায়কের অধ্যায় যে এবার ‘ক্লোজড চ্যাপ্টার ’ দলের অন্দরে তা স্পষ্ট করেই দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। শুক্রবার দলীয় বৈঠকে সেই বার্তা আরও স্পষ্ট হল।

Advertisement
হাইলাইটস
  • শুভেন্দু যে 'ক্লোজড চ্যাপ্টার' এবার সেই বার্তা দিলেন মমতাও
  • নন্দীগ্রাম এলাকায় দলবিরোধী কাজ বরদাস্ত করা হবে না
  • শিশির অধিকারীকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন মমতা

বুধবার সৌগত রায়কে পাঠান শুভেন্দুর হোয়াটসঅ্যাপের পরেই নন্দীগ্রামের বিধায়কের অধ্যায় যে এবার ‘ক্লোজড চ্যাপ্টার ’ দলের  অন্দরে তা  স্পষ্ট করেই দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। শুক্রবার দলীয় বৈঠকে সেই বার্তা আরও স্বচ্ছ হল। এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি তথা বর্ষীয়াণ সাংসদ শিশির অধিকারীকে বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী বলেন, নন্দীগ্রাম-হলদিয়া ও কাঁথিতে দলবিরোধী কাজ চলছে। এ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতিকে নির্দেশ দেন নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না নিলেও এর লক্ষ্য যে কে ছিলেন তা বুঝতে কারও বাকি থাকেনি। 

আগামী সপ্তাহেই কলকাতায় নাড্ডা, বড়দিনের আগে রাজ্যে মোদী

এদিনে দলের সাংসদ-বিধায়ক-জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সেখানেই দল বিরোধীদের কড়া বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে নন্দীগ্রাম-হলদিয়া ও কাঁথিতে যে দলবিরোধী কার্যকলাপ বেড়েছে সেই প্রসঙ্গও তোলেন। এমনকি নন্দীগ্রাম ও নন্দকুমারে দলের দায়িত্বে থাকা নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়ার মত কড়া কথাও বলতে শোনা যায় মমতাকে। 

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের এই এলাকায় বিজেপির আধিপত্যের প্রসঙ্গও তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী। বিজেপি এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে।  নেত্রীর কথায়, “আমাদের সঙ্গে যাঁরা নেই তাঁদের সরাতে হবে। বিজেপি একাধিক এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। যাঁদের সাহস রয়েছে, তাঁরা আমাদের সঙ্গে থাকুন। না থাকতে পারলে লুঠেরাদের কাছে যান। দলের হয়ে কাজ না করলে দলে থাকতে হবে না”। শুভেন্দু অধিকারীর নাম না নিলেও এদিনের বৈঠকে নিশানা যে তিনিই ছিলেন সে ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত তৃণমূলের বাকি নেতা-নেত্রীরা।

আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে ৪ বার ফোনে কথা, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?

নিজের উদাহরণ তুলে ধরে মমতা বলেন, “ঘরে বসে থাকার সময় আর নেই। ৭ ডিসেম্বর থেকে আমি যেমন প্রচার কর্মসূচি শুরু করছি, তেমনই দলের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে পথে নামতে হবে”। উল্লেখ্য ৭ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুর লাগোয়া পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বিধানসভা ভোটের জন্য প্রচার কর্মসূচি শুরু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একসময় পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদহ এই পাঁচ জেলায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর ৭ ডিসেম্বর থেকে এই পাঁচ জেলায় টানা সফরের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচি শুরু করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটাও শুভেন্দুকে তৃণমূলনেত্রীর দেওয়া একটা বার্তা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। 

Advertisement

মঙ্গলবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বৈঠকের সময় ফোনে নন্দীগ্রামের বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। সেই সময় শুভেন্দু একসঙ্গে বিধানসভা ভোটে লড়ার জন্য এগিয়ে আসতে বলেছিলেন মমতা। কিন্তু বুধবার দুপুরের পর একদা নিজের সেনাপতির আচরণের পর মত বদলে নেন নেত্রী। তাই যে নন্দীগ্রাম আন্দোলন দিয়ে বাংলার মসনদে বসার যাত্রা শুরু করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী সেখানেই এবার দল বিরোধী কাজ নিয়ে সোচ্চার হলেন মমতা। মমতা যে নাম না করে শুভেন্দু ও তাঁর অনুগামীদের বার্তা দিয়েছেন, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলের সকলেই নিশ্চিত।  আর সেই বার্তাও দেওয়া হল শুভেন্দুর বাবা তথা দলের দীর্ঘদিনের সদস্য শিশির অধিকারীকেই। শুভেন্দু নিয়ে নেত্রী যে আর নমনীয় নন, তা বোঝাতে পশ্চিমবঙ্গ সরাকরি কর্মচারী পরিষদের মেন্টর থেকে বৃহস্পতিবারই শুভেন্দুকে অপসারিত করে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। 

 

Advertisement