পরীমনির জন্য সুবিচার চাইছেন শাকিব, কী বলছেন বাংলাদেশের সুপারস্টার?

লকডাউনের কারণে দীর্ঘ সময় শুটিংয়ের বাইরে ছিলেন বাংলাদেশের সুপারস্টার শাকিব খান। লকডাউন উঠে যাওয়ায় গত ১১ অগাস্ট থেকে তিনি ফের শুটিং শুরু করেছেন। বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড-এর চলচ্চিত্র ‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’ এর সিনেমার শুটিং শুরু করেছেন। এফডিসিতে চলছে শুটিং। আর এর মাঝেই এবার পরীমনি প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেতা। পরীমনিকে নিয়ে শিল্পী সমিতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নায়ক। পাশাপাশি পরীমনির দাদু শামসুল হকের বিষয়টি নিয়েও নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন শাকিব খান।

 

 

শিল্পী সমিতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
শনিবার ফেসবুক বিশাল পোস্ট করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা।  সেখানে পরীমনির সদস্যপদ স্থগিতসহ তাকে নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভূমিকা বিতর্কিত বলে আখ্যা দিয়েছেন সমিতির প্রাক্তন  সভাপতি ও শাকিব খান। তিনি বলেন, বিগত দিনেও একাধিক সিনিয়র শিল্পী এর চেয়েও ভয়ঙ্কর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু তখনকার শিল্পী সমিতি অভিযুক্ত সদস্যের সদস্যপদ স্থগিত করেনি। বরং পাশে ছিল, রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু এখনকার শিল্পী সমিতির এসব আচরণ বিতর্কিত। আবারও বোঝা গেল, এই শিল্পী সমিতি সবাইকে এক করতে পারেনি; বরং বিচ্ছিন্ন করেছে। বিভেদ তৈরি করে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ নষ্ট করেছে। হয়ত এজন্য চলচ্চিত্রের আজ এই দুর্দশা। এমনিতেই নানা কারণে সিনেমা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তার মধ্যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সামনে আরও ঘোর বিপদ।

 

পরীমনিকে নিয়ে শাকিব
ঢাকার বনানীর বাড়িতে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে গত  ৪ অগাস্ট পরীমনিকে গ্রেফতারের পর ৭ অগাস্ট বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) সংবাদিক  সম্মেলন করে। সেখানে পরীমনির  সদস্যপদ স্থগিতের ঘোষণা করেন  সংগঠনের সভাপতি মিশা সওদাগর। এই প্রসঙ্গে সাকিব লেখেন,  শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনি গ্রেফতারের পর তার প্রতি কোনো ধরনের সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে, দুঃসময়ে শিল্পীর পাশে না থেকে উল্টো তড়িঘড়ি করে সংবাদিক সম্মেলন করেছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। মুহূর্তে পরীমনির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে! এ যেন কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা। সমিতির এই আচরণ সত্যিই খুব রহস্যজনক। বিষয়টি নিয়ে বিবেকবান অনেক সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের আক্ষেপ রয়েছে। শিল্পীর সাথে সংগঠনের এটি একটি অমানবিক আচরণ। প্রশ্ন থেকে যায়, এখনকার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তাহলে কাদের স্বার্থে?

 

 

"পরীমনিকে বিপথে নিয়ে গেছে, তাদেরকেও খুঁজে বের করা উচিত"
পরীমনিকে গ্রেফতারের পর দুই দফা রিমান্ড শেষে শুক্রবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে শাকিব খানের বক্তব্য, পরীমনির মামলা এখন বিচারাধীন। ওই বিষয়ে কিছু বলছি না। সে যে মামলায় গ্রেফতার হয়েছে, তার কী অপরাধ সেটা বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। দেশের প্রচলিত আইন আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে। নিশ্চয়ই নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে সঠিক বিচার হবে। কিন্তু তার আগে পরীমনির জীবন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যেভাবে তাকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, এটা সত্যি দুঃখজনক। সেই সঙ্গে পরীমনিকে যারা ‘বিপথে নিয়ে গেছেন’ তাদেরও খুঁজে বের করা উচিত বলে মনে করেন শাকিব। তিনি বলেন, সহশিল্পী হিসেবে আশা রাখি, পরীমনির ক্ষেত্রে আইন তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। পরীমনি যখন ফিরবে তার ভুল থেকে শিক্ষাও নেবে। যে শিক্ষা তার আগামী জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।

আরও পড়ুন: বাস্তবের পরীকে বাঁচাতে ময়দানে নায়কের এন্ট্রি, মামলা লড়ছেন এই অভিনেতা

পরীমনির নানা শামসুল হক-কে নিয়েও পোস্ট শাকিবের
 নিজের ফেসবুক পেজে পরীমনির দাদুর আদালতে যাওয়ার প্রসঙ্গটিও টেনেছেন শাকিব। তিনি লিখেছেন, 'গত ১০ আগস্ট আদালত চত্বরে পরীমনির শতবর্ষী নানা তার নাতনিকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন। করোনার ভয়াবহতাও তাকে আটকাতে পারেনি। রক্তকে উপেক্ষা করতে পারেনি রক্ত। কিন্তু সময় কি নিষ্ঠুর। নাতনীর সঙ্গে দেখাই হলো না তার নানার। আদালত চত্বরেই তার নানাকে বলতে শুনেছি, "নিজের জন্য জীবনে কিছুই করেনি পরীমনি। সব মানুষের জন্য দান করে গেছে। আর এখন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।"'

 

আরও পড়ুন: চক্রান্তের শিকার হয়েছেন পরীমনি? উঠছে যে প্রশ্নগুলি

পরীমনি প্রসঙ্গে শাকিব খান বলেন, সহকর্মী হিসেবে যতদূর জানি পরীমনি বাবা-মা হীন। তার বেড়ে ওঠা পারিবারিকভাবে আর পাঁচটা তরুণ-তরুণীর বেড়ে ওঠা, স্ট্রাগলে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। হয়তো সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে পরীমনি অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। শেষে অভিনেতা লিখেছেন, সহশিল্পী হিসেবে আশা রাখি, পরীমনির ক্ষেত্রে আইন তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। পরীমনি যখন ফিরবে তার ভুল থেকে শিক্ষাও নেবে। যে শিক্ষা তার আগামী জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।