scorecardresearch
 

DHAKA:গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানি হানদাররা, এখন কেমন রয়েছে ইতিহাসের শাঁখারিবাজার?

ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জীবনধারা আর শৈল্পিক স্থাপত্যের মেলবন্ধন পুরনো ঢাকা। এখানে আছে ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য, বিরিয়ানি, বাকরখানিসহ রসনা তৃপ্তিকারী নানান খাবার। তামা, কাঁসা, শঙ্খের মতো হস্ত ও কুটিরশিল্প। নদীতে নৌযান এবং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় বাহন রিকশা। আর ইতিহাসের এই পুরনো ঢাকার অন্যতম অংশই হল শাঁখারিবাজার।

Advertisement
শাঁখারীদের নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ করা হয় শাঁখারীদের নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ করা হয়
হাইলাইটস
  • ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জীবনধারা আর শৈল্পিক স্থাপত্যের মেলবন্ধন পুরনো ঢাকা
  • ইতিহাসের এই পুরনো ঢাকার অন্যতম অংশই হল শাঁখারিবাজার
  • শাঁখারিদের নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ করা হয়

ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জীবনধারা আর শৈল্পিক স্থাপত্যের মেলবন্ধন পুরনো ঢাকা। এখানে আছে ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য, বিরিয়ানি, বাকরখানিসহ রসনা তৃপ্তিকারী নানান খাবার। তামা, কাঁসা, শঙ্খের মতো হস্ত ও কুটিরশিল্প।  নদীতে নৌযান এবং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় বাহন রিকশা। আর ইতিহাসের এই পুরনো ঢাকার অন্যতম অংশই হল শাঁখারিবাজার। এখানকার শাখাঁরিরা বংশানুক্রমিকভাবে শাঁখা তৈরি করে চলেছেন। সারাবছরই এখানে শাঁখা, পিতল আর নানারকম পূজা সামগ্রী বিক্রি হয়।  প্রাচীন ঢাকার ইতিহাসের সঙ্গে মসলিনের মতো জড়িয়ে আছে এখানকার শঙ্খশিল্প। বংশানুক্রমে এই শিল্পে জড়িয়ে আছে এখানকার অসংখ্য পরিবার। শাঁখারিদের নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ করা হয়। ঢাকা শহরে বসবাসকারী হিন্দুদের একটা বড় অংশকেই এই এলাকায় পাওয়া যায়। 

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের আদি অংশটিকে বলা হয় পুরোনো ঢাকা। এখানেই বুড়িগঙ্গা নদীর কাছে ইসলামপুর রোড এবং নওয়াবপুর রোডের সংযোগস্থলে রয়েছে শাঁখারিবাজার। জানা যায়, এখানকার শাখাঁরিরা বংশানুক্রমিকভাবে শাঁখা তৈরি করে চলেছেন। গবেষকরা বলেন, এঁদের পূর্বপুরুষরা হাজার বছর আগে বল্লাল সেনের আমলে দক্ষিণ ভারত থেকে এসেছিলেন বাংলায়। তাঁরাও শাঁখা বানাতেন। প্রথমে তাঁরা বসতি গড়ে তোলেন বিক্রমপুর অঞ্চলে। তারপর ঢাকা এলাকার শাঁখারি পট্টি বা শাঁখারিবাজারে থাকা শুরু করেন। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গির ঢাকায় সুবাহ বাংলার রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। তাঁর নিযুক্ত সুবাহদার ইসলাম খাঁর সেনাপতি মির্জা নাথানের লেখায় শাঁখারিবাজারের উল্লেখ পাওয়া যায়। সতেরো শতকে নেপাল, ব্রহ্মদেশ, ভুটান, চিন প্রভৃতি নানা দেশে এখান থেকে শাঁখা রফতানি হত। প্রয়োজনের তাগিদে এই জায়গা ছাড়াও বরিশাল, সাতক্ষীরা, খুলনা, পাবনা, নাটোর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুরের মতো নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিলেন শাঁখারিরা। জেমস ওয়াইজ ১৮৮৩ সালে লিখেছেন, তখন ঢাকায় ৮৩৫ জন শাঁখারি বসবাস করতেন।
 
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে শাঁখারিবাজার গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানি হানদার বাহিনী। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলে আবার নতুন উদ্যমে শাঁখা তৈরির কাজ শুরু হয় এখানে। মূলত হিন্দুরাই শাঁখা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। শঙ্খ কেটে শাঁখা তৈরি, নানারকম অলঙ্করণ – এগুলো খুব জটিল এবং সূক্ষ্ম কাজ। পরিশ্রমসাধ্যও বটে। তাই বর্তমানে  শাঁখারিপাড়ায় নতুন প্রজন্মের অনেকেই এই পেশাকে গ্রহণ করতে চান না। অনেকেই ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য পেশাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এর ফলে বাংলাদেশে প্রাচীন শাঁখা শিল্প আজ বিপন্নতার মুখোমুখি। তারই মধ্যে লড়াই করে চলেছেন শাঁখারিরা। শাঁখারিবাজার অঞ্চলকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। 

Advertisement

 

Advertisement