মধুবালাকে (Madhubala) ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে সুন্দরী অভিনেত্রী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিদেশেও তার সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা ছিল। মানুষ তাকে নিয়ে পাগল ছিল এবং মধুবালার নামে কোটি মানুষের হৃদয় স্পন্দিত হতো। রূপের দেবী আজকের বিশেষ দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৩৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মধুবালার জন্ম হয়।
ভালোবাসা দিবসে (Valentine's Day) জন্ম নেওয়া মধুবালাকে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হত। অনস্ক্রিনে তার বাবলী স্টাইল সবাইকে মুগ্ধ করেছিল। আজকের প্রজন্মও তার সৌন্দর্যে মোহিত। আজকাল মেয়েরাও তাঁর মতো সুন্দরী হতে চান। কিন্তু মধুবালা ছিলেন মাত্র একজন।
প্রেমের এই সুন্দর দিনে জন্ম নেওয়া মধুবালার প্রেমের যাত্রা ছিল সম্পূর্ণ একাকী। সেই সময়ের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার দিলীপ কুমারের সঙ্গে মধুবালার সম্পর্ক ছিল। দুজনেই একে অপরকে খুব পছন্দ করতেন। মধুবালার পরিবারের সঙ্গেও দিলীপ কুমারের ভালো সম্পর্ক ছিল। জোয়ার ভাটা ছবির সময় দুজনের প্রথম দেখা হয়।
১৯৫১ সালের তারানা ছবি দিয়ে তাদের রোম্যান্সের আলোচনা শুরু হয়। তাদের দুজনের সম্পর্ক টিকে ছিল ৬-৭ বছর। মধুবালা সেই দিনগুলোকে তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিন বলে মনে করতেন। কিন্তু ভাগ্যের মনে অন্য কিছু ছিল। ১৯৫৭ সাল ছিল সেই বছর যখন মধুবালা এবং দিলীপ কুমারের মধ্যে দূরত্ব আসতে শুরু করে।
আসলে, দিলীপ কুমার মধুবালার বাবার কিছুই পছন্দ করতেন না এবং উভয়ের মধ্যে ফাটল দেখা দেয়। ফলে মধুবালা ও দিলীপ কুমারের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যায়। তাদের দুজনের সম্পর্কের ইতি ঘটে এক জেদের বশে।
দুজনেই একে অপরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। দিলীপ কুমার চেয়েছিলেন মধুবালা যেন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাঁকে বিয়ে করেন, অন্যদিকে মধুবালা চেয়েছিলেন দিলীপ কুমার তার বাবার কাছে ক্ষমা চান এবং তারপর দুজনেই বিয়ে করেন। কিন্তু দুজনেই অনড় ছিলেন এবং বলিউডের ইতিহাসের সবচেয়ে চর্চিত জুটির দুঃখজনক পরিণতি হয়েছিল। দুজনে এক সঙ্গে অনেক ছবিতে কাজ করেছেন।
এর পর মধুবালার জীবনে প্রবেশ করেন কিশোর কুমার। কিশোর কুমার শান্ত ছিলেন এবং কিশোরের শীতল স্টাইলে মধুবালা তার দুঃখ ভুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। কিশোরও মধুবালাকে পছন্দ করতেন। দুজনে একসঙ্গে চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। অভিনয়ে আগ্রহ না থাকার পরও কিশোর কুমারের ছবি হাফ টিকিট দারুণ সফল হয়েছিলেন। ছবিতে মধুবালা ও কিশোর জুটি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
পেশাগত এবং ব্যক্তিগত ফ্রন্টে দুজনেই খুব ভালো করছিলেন। দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা অনেক বেড়ে যায় এবং দুজনেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। দুই পরিবারই এই বিয়ের বিপক্ষে থাকলেও দুজনেই গোপনে বিয়ে করেন। মধুবালা এবং কিশোর কুমার ১৯৬০ সালে বিয়ে করেন।
বেশ কয়েক বছর দুজনের দাম্পত্য জীবন ভালোই চললেও এরপর মধুবালার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। কিশোর কুমারও কাজে ব্যস্ত থাকায় মধুবালাকে বেশি সময় দিতে পারেননি। বিবাহিত হয়েও মধুবালার জীবন চলছিল একাকীত্বের মধ্যে দিয়ে। অসুস্থতার পরে তিনি বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ করেছিলেন। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩৬ বছর বয়সে প্রয়াত হন মধুবালা।