
আমির খানআমির খানকে বলিউডের 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' বলা হয়। নিজের অভিনয় দক্ষতায় গত পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সকলের মন জয় করছেন তিনি। নিজে 'পারফেকশনিস্ট' হলেও, ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর সব কিছু 'পারফেক্ট' নয়। অ্যাজেন্ডা আজতক ২০২৫-এ উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা।
বলিউডের সফল 'তিন খানের' মধ্যে একজন আমির খান। তবে তাঁর জার্নিটা অতটা সহজ ছিল না। অন্যতম জনপ্রিয় ছবি 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক'-পর কেরিয়ারে নানা বাধা- সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন আমির। তিনি বলেন, "একটা সময় আমার পরপর সব ছবি ফ্লপ হচ্ছিল। নিজের কাজ নিয়ে আমি একদম খুশি ছিলাম না। বাড়ি এসে কাঁদতাম রোজ। সেসময় আমার স্ত্রী ছিলেন রীনা। বাড়ি ফিরে ওঁর কাছে বসে কেঁদেছি কতদিন। সেসময় আমার কাছে মহেশ ভাট সাহাবের ফোন এল। তবে আমার পছন্দ হয়নি সেই চিত্রনাট্য। অনেক ভাবনা- চিন্তা করে আমি ওঁকে না করে দিই। সেই কাজটাই হয়নি। সেদিন আমি বাড়ি ফিরেছি অনেকটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে। যখন আমি আমার সবচেয়ে খারাপ সময় না বলতে পেরেছিলাম, তখন সব পারব। যদি আমার গল্প পছন্দ না হয়, আমি কাজটা করতে পারব না। এটা আমার নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ছিল।"

প্রতিবার নতুনত্ব থাকে আমির খানের করা সব কাজে। এই প্রসঙ্গে অভিনেতা বললেন, "ছোটবেলা থেকে আমার গল্প শুনতে খুব ভাল লাগে। আমার বাবার কাছে পরিচালকেরা আসতেন গল্প নিয়ে। অনেক ছোট থেকে আমি গল্প পড়া শুরু করেছি। মানুষের গল্প মার বেশি ভাল লাগে। একই গল্প বলতে ভাল লাগে না। এজন্যেই আমি আমার দর্শককে প্রতিবার নতুন গল্প উপহার দিই।" অভিনেতার কাছে ভাল গল্পের দর বরাবর বেশি। তিনি বলেন, "আজ অবধি আমার যত ছবি সফল হয়েছে, সেটায় অনেকের কৃতিত্ব রয়েছে। ছবি বানানোয় আমার একার কোনও কৃতিত্ব নেই। বিশেষত প্রথম কৃতিত্ব চিত্রনাট্যকারের। গোটা টিমকে আমি সব সময় কৃতিত্ব নিই। আমার কাছে যে কোনও ছবির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল চিত্রনাট্য।"

এদিন আমির খান বলেন, "আমার হয়তো ১৫ টি ছবি আছে যা মেইনস্ট্রিমের থেকে একদম আলাদা। আমার আসলে যে সব ছবি ভাল লাগে তা একদম আলাদা। অনেক ঝুঁকি থাকে। 'তারে জমিন পর' হোক কিংবা 'লাগান', এসব ছবিগুলো বানানোর সময় জানতামই না কতজন দেখতে আসবেন।" তিনি আরও বলেন, "আমি কখনও সামাজিক ছবি বানাতে চাইনি। দর্শকের মনোরঞ্জন করা আমার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। টিকিট কেটে একজন সিনেমা হলে আসছে মনোরঞ্জনের জন্যই। আমার বানানো ছবিগুলোর চিত্রনাট্য খুব শক্তিশালী। সেই সঙ্গে উপরি পাওনা হিসাবে একটা এত বড় মেসেজ ছিল।"
আমির খান জানান তিনি মনে করেন বর্তমান সময়ে, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া কোনও বিশেষ প্রভাব পড়ে না ছবির সাফল্যের উপর। তাঁর কথায়, "ছবিটা ভাল হলে দর্শক সিনেমা হলে আসবে। 'সিতারে জমিন পর'-র বক্স অফিসে শুরুটা একদম ভাল ছিল না। এরপর এত কোটির রেকর্ড ভেঙেছে। ছবিটা খারাপ হলে কেউ দেখতে আসবে না। মানুষের মুখে মুখে সুনাম ছড়িয়ে পড়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে হ্যাঁ এখন মার্কেটিং খুব কঠিন।"