
যাঁরা ১৯৭০ এবং ১৯৮০-র দশকের বাসু চট্টোপাধ্যায়, ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায় ঘরানার ছবি পছন্দ করেন তাঁরা একে নিঃসন্দেহে প্রীতি গঙ্গোপাধ্যায়কে চিনবেন। বহু সিনেমায় দর্শকদের হাসিয়ে-কাঁদিয়ে তিনি বেশ নাম করেছিলেন। বাবা বলিউডের দাদামণি অশোক কুমার। কিশোর কুমার কাকা। এমন একটা পরিবার থেকে সিনেমায় আসা বা তার সঙ্গে যুক্ত হওয়া কোনও বড় বিষয় নয়। যেমনটা হয়েছে প্রীতির সঙ্গে। সত্তর দশকের শুরুর দিক থেকে আশির দশকের শেষ দিক পর্যন্ত চরিত্রাভিনেতা হিসাবে যথেষ্ট সমাদৃত হন প্রীতি।
কিন্তু হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলেন একদিন!
যে সমস্ত সিনেমা প্রীতি অভিনয় করেছেন তার মধ্যে বেশিরভাগই তাঁর শারীরিক গঠনের সঙ্গে মানানসই চরিত্র ছিল। দর্শক তাঁকে সে ভাবেই দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন এবং পছন্দও করতেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে ৩০টি ছবিতে অভিনয় করেন প্রীতি। যার মধ্যে বেশিভাগই কমিক চরিত্র ছিল। ১৯৭৪ সালে ধুঁয়ে কি লকির সিনেমায় ডেবিউ করেন প্রীতি। তাঁর সবচেয়ে হিট ছবি গুলির মধ্যে খেল খেল মে, বালিকা বধূ, অনুরোধ, দিললগি, খাট্টা মিঠা, ঝুঠা কহিঁ কা, ক্রান্তি উল্লেখযোগ্য।
১৯৮৮ সালে তিনি ঠিক করেন ওজন কমিয়ে নতুন অবতারে আত্মপ্রকাশ করবেন। কিন্তু ওজন কমানোর কারণেই তিনি একের পর এক চরিত্র হারাতে থাকেন। প্রায় ৫ বছর পর্যন্ত তেমন ভাবে কোনও সিনেমায় ডাক আসেনি। তখন তিনি অ্যাক্টিং অ্যাকাডেমি খোলেন। অ্যাকাডেমির নাম রাখেন, অশোক কুমার অ্যাকাডেমি অফ ড্রামিটিক আর্টস। সেই অ্যাকাডেমিতে পড়াতেন তাঁর বন্ধু শাবানা আজমিও।
প্রায় দু দশকের কাছাকাছি অজ্ঞাতবাসে থাকার পর ২০০৫ সালে ইমরান হাশমি অভিনীত আশিক বনায়া আপনে ছবিতে তাঁকে ফের একবার দেখা যায়। তবে ওটাই তাঁর শেষ ছবি ছিল। তার পর থেকে এক প্রকার নিজেকে গুটিয়েই নেন প্রীতি। ২০১২ সালে হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক থেকে তাঁখে রক্ষা করা যায়নি। মাত্র ৫৯ বছরে দুনিয়াকে চিরবিদায় জানান প্রীতি গঙ্গোপাধ্যায়।