১৫ ফেব্রুয়ারি বৈভব রেখির (Vaibhav Rekhi) সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী দিয়া মির্জা (Dia Mirza)। দেড় মাসের ব্যবধানে তিনি সোশাল পোস্ট করে গত ১ এপ্রিল জানিয়েছিলেন যে মা হতে চলেছেন। তবে এপ্রিল ফুলের দিন পোস্ট করায় ধন্দে ছিলেন বহু নেটিজেন। তাই দিয়ার পোস্টে বহু মানুষ শুভেচ্ছার বন্যা বইয়ে দিলেও আদপে খবরটা ঠিক কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বহু মানুষ।
সম্প্রতি মালদ্বীপে হানিমুনের আরও একটি স্লো মোশন ভিডিয়ো, যেখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তাঁর বেবি বাম্প। আর তাতেই নেতিবাচক মন্তব্য করা শুরু করেছেন নেটিজেনদের একাংশ। যদিও নায়িকা তাতে থেমে থাকেননি। তিনিও মোক্ষম জবাব দিয়েছেন এসব প্রশ্নের।
বিয়ের আগে কেউ সন্তানসম্ভবা হলে আজও সমাজে টা ট্যাবু। অনেকই ব্যাকা চোখে দেখেন বিষয়টা। আর হবু মাকে সহ্য করতে নানা কটুকথা, স্বীকার হতে হয় ট্রোলিংয়ের। বাদ গেলেন না 'মম টু বি' দিয়া মির্জাও। তাঁর প্রেগন্যান্সির খবর শুনে যেমন খুশি হয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নেটাগরিকরা তেমনই প্রশ্নবাণ ছুড়েছেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে একজন নায়িকাকে কটূক্তি করে কমেন্ট করেছেন, "প্রেগন্যান্ট হয়ে বিয়ে করেছেন আপনি, লজ্জা করে নি হিন্দি রীতি নিতি মেনে বইয়ে করতে? দয়া করে ধর্ম ও হিন্দু বিশ্বাসের সঙ্গে খেলবেন না।"
আরও একজন নেটিজেন নায়িকাকে লিখেছেন, "'অভিনন্দন। কিন্তু যখন বিয়ের সময় মহিলাকে দিয়ে পৌরহিত্য করাতে পারলেন, তখন গর্ভাবস্থার কারণে বিয়েটা কেন করলেন? বিয়ের আগে কী মহিলারা সন্তানসম্ভবা হতে পারেন না? আজও কী এই ছুতমার্গ বজায় থাকবে?" এই প্রশ্নের উত্তরে 'রেহনা হ্যায় তেরে দিল মে' খ্যাত অভিনেত্রীর উত্তর দেন, 'খুবই ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন করেছেন আপনি। প্রথমত শুধুমাত্র সন্তানসম্ভবা হওয়ার কারণে আমি বিয়ে করিনি। আমরা একসঙ্গে জীবন কাটাতে চেয়েছিলাম। যখন সুখবরটি জানতে পারি, সে সময় আমরা বিয়ের প্ল্যানিং করছিলাম। বিয়ের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল ওই খবর।"
শুধু তাই নয়, দিয়া মির্জা আরও লেখেন, "'কিছু সমস্যা থাকার কারণে আমরা বিষয়টি জানাইনি। আগে জটিলতাগুলি কাটাতে চেয়েছিলাম। চিকিৎসকদের সবুজ সংকেত মেলার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্ভাবস্থার খবরটি জানাই। সুতরাং এটা স্পষ্ট যে বিয়েটা ফ্যাক্টর ছিল না।" তবে স্পষ্টভাষী অভিনেত্রী এরপর একটু অন্য সুরে আরও বলেন, "আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর নাই দিতে পারতাম। কিন্তু তা করলাম না। কারণ আমি মনে করি যে মাতৃত্ব একজন নারীর জীবনে খুশির স্রোত বইয়ে দেয়। আমি এই দিনগুলির জন্য বহুদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম। কখন একজন নারী সন্তান ধারন করবেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এই নিয়ে সমাজ কেন, পরিবারেরও কথা বলা উচিত নয়। ছুতমার্গ থাকার তো কথাই নেই।"
যদিও এই সমস্ত সমালোচনার পাশাপাশি বেশির ভাগ নেটিজেন দিয়া মির্জার হয়েই কথা বলেছেন। অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্যের উত্তর নিজেরাই দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: অনুষ্কা শর্মা থেকে দিয়া মির্জা, বলিউড মেতে বেনারসীতে
প্রসঙ্গত, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-এর পরের দিন, ১৫ ফেব্রুয়ারি সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন দিয়া মির্জা। বয়ফ্রেন্ড, ব্যবসায়ী বৈভব রেখিকে বিয়ে করেছেন দিয়া মির্জা। এর আগে ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে সাহিল সংঘের সঙ্গে তাঁর পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলেন যে তাঁদের বিচ্ছেদের কথা। অন্যদিকে প্রথম স্ত্রী সুনয়না রেখির সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর দিয়াকে বিয়ে করেন বৈভব। বান্ড্রাতে বসেছিল দিয়া- বৈভবের বিয়ের আসর। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন খুব কাছের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা। বৈদিক মতে সম্পন্ন হয় তাঁদের বিয়ে, তাই কন্যাদান, কন্যা বিদায় হয়নি। বিয়েও দিয়েছিলেন একজন মহিলা পুরোহিত। এরপর সম্প্রতি মালদ্বীপে হানিমুনে যায় দিয়া-বৈভব। সঙ্গে রয়েছে বৈভবের প্রথম পক্ষের মেয়ে সামায়রা-ও।