আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। শাহরুখ খানের কামব্যাক সিনেমা 'পাঠান' মুক্তির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। বুধবার দেশের প্রায় সব সিনেমা হলই হাউজফুল থাকবে বলে আশা করছেন হল মালিকরা। ইতিমধ্যেই এই সিনেমার অ্যাডভান্স বুকিং রেকর্ড গড়ে ফেলেছে। এই সিনেমার 'বেশরম রঙ' নিয়ে যে বিবাদ শুরু হয়েছিল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সিনেমার বিরোধিতা করার লোকেরাও এখন শান্ত হয়ে গিয়েছে।
'পাঠান' মুক্তি নিয়ে খুশি নন কলকাতার পরিচালকরা
'পাঠান' নিয়ে বর্তমানে যে আবহ তৈরি হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে যে এই সিনেমা প্রথম সপ্তাহেই ব্যাপক আয় করবে। আগাম ইঙ্গিত এও পাওয়া যাচ্ছে যে এই সিনেমার মুক্তির পর সিনেমার ডিস্ট্রিবিউটার ও প্রযোজক সংস্থার ব্যাঙ্ক ব্যালান্স বাড়তে চলেছে। এমনিতে শাহরুখ খান যেমন কলকাতাকে ভালোবাসেন, তেমনি কলকাতার বাসিন্দারাও এসআরকের প্রেমে পাগল। তবে বুধবার ২৫ জানুয়ারি এই ছবি মুক্তির কারণে কলকাতার কিছু পরিচালক মোটেও খুশি নন।
মুক্তি পেয়েছে তিনটে বাংলা সিনেমা
শাহরুখ খান ও দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত 'পাঠান' সিনেমা যাতে বড়ভাবে মুক্তি পায় তার জন্য ডিস্ট্রিবিউটার সম্ভাব্য সব চেষ্টা করবে। বিদেশের মাটিতে পাঠান ২৫০০-এর বেশি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে। ভারতে এর থেকে বেশি স্ক্রিনে এই সিনেমা যাতে মুক্তি পায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। এরকম অবস্থায় 'পাঠান'-এর ডিস্ট্রিবিউশনের মডেল কলকাতার কিছু পরিচালকদের কারণে সমস্যায় পড়তে পারে। জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে 'কাবেরী অন্তর্ধান', 'দিলখুশ' ও 'ডক্টর বক্সী' মুক্তি পেয়েছে। এই তিনি সিনেমা সমালোচকদের কাছ থেকে ভালো প্রতিক্রিয়া পাচ্ছে। কিন্তু এখন 'পাঠান' সিনেমাকে জায়গা দেওয়ার জন্য এই সিনেমাগুলির শো কমিয়ে দিতে হবে। যার কারণে এই তিন সিনেমা বড় লোকসানের মুখে পড়বে বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Pathaan Controversy: মোদী-দাওয়াইয়ের জের? গুজরাতে 'পাঠান' বিরোধিতা করবে না বজরং দল-VHP
দেখানো যাবে না অন্য কোনও বাংলা সিনেমা
জানা গিয়েছে যে 'পাঠান' ডিস্ট্রিবিউটার সিঙ্গল স্ক্রিনে এই সিনেমা দেখানোর জন্য একটি নিয়ম রেখেছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী, সিঙ্গল স্ক্রিনের সিনেমা হলে যদি 'পাঠান' দেখানো হয় তবে তাকে পুরো দিনই শাহরুখের সিনেমাকেই শো দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে 'কাবেরী অন্তর্ধান' সিনেমার পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন যে সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলের মালিকদের ওপর অসম্ভব চাপ রয়েছে সেটা উনি বুঝতে পারছেন বলে তাঁর কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু এই ধরনের ব্যবসার নীতি বদলানো উচিত।
সোচ্চার হন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়
পরিচালক কৌশিক আরও বলেন, 'আমাদের বাংলাতেও সঠিক চলচ্চিত্র নীতি তৈরি করা দরকার। আমি জানি কাবেরী অন্তর্ধান অন্যান্য বাঙালী সিনেমাগুলোর মতোই একই পথের পথিক হবে। সিঙ্গল স্ক্রিনের মালিকদের বলা হয়েছে যে য়দি তারা পাঠান সিনেমা চালান তবে অন্য কোনও সিনেমা প্রদর্শন করতে পারবেন না। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বছরের পর বছর এই ইস্যু নিয়ে চুপ রয়েছে কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এটা নিয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। ৪০-৫০টি হলে বাংলা সিনেমা যেখানে ভালো ব্যবসা করছে সেখানে নিজের রাজ্যে এই ধরনের খারাপ আচরণ পেলে মানতে হবে যে কোনও সমস্যা তাহলে রয়েছে।' পরিচালক এরপর এও জানিয়েছেন যে বাংলা সিনেমাগুলিকে প্রাইম টাইমে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ শো পাওয়া দরকার। সরকারের উচিত এতে হস্তক্ষেপ করা।
বহু পুরনো ব্য়বসার নীতি এটা
অপরদিকে পাঠান সিনেমার ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ থেকে বলা হয়েছে যে হিন্দি সিনেমার জন্য এই ব্যবসার মডেল নতুন নয়, এটা বহু বছর ধরে চলে আসছে। যদিও বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাতারাও বলছেন যে এটি একটি ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত এবং হিন্দি চলচ্চিত্রের পরিবেশকরা বাংলা সিনেমার ক্ষতি করার জন্য এটি করেন না।
'পাঠান' চলবে না শহরের বহু সিঙ্গল স্ক্রিন হলে
এরই মধ্যে নবীনা সিনেমা, স্টার থিয়েটার্স ও অশোকা সিনেমা হলের মতো শহরের বেশ কিছু সিঙ্গল স্ক্রিন রয়েছে য়ারা পাছান-এর পরিবর্তে বাঙালি সিনেমা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অশোকার মালিক প্রবীর রায় এ প্রসঙ্গে বলেন,'হ্যাঁ, আমি শাহরুখ খানের সিনেমা প্রদর্শন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পাঠান সিনেমার ডিস্ট্রিবিউটররা অন্য বাংলা সিনেমার সঙ্গে আপোষ করতে রাজি নয়। এরজন্য আমি তাঁদের না করে দিয়েছি।'