Khakee The bengal Chapter: কতটা মন ভরালো ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-প্রসেনজিত না জিৎ কে টেক্কা দিলেন?

Khakee The bengal Chapter: এই কাহিনিতে পুলিশের ভেতরকার রাজনীতি, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং গোপন চক্রান্তের দিকটিও উঠে এসেছে। যদিও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রের প্লটটি আরও গভীরভাবে তুলে ধরা যেত, তা কিছুটা হালকাভাবে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
কতটা মন ভরালো ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-প্রসেনজিত না জিৎ কে টেক্কা দিলেন?কতটা মন ভরালো ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-প্রসেনজিত না জিৎ কে টেক্কা দিলেন?

নেটফ্লিক্সের নতুন সিরিজ ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ গ্যাংস্টার-ড্রামা প্রেমীদের জন্য এক পরিচিত স্বাদ নিয়ে হাজির হয়েছে। তবে এটি নতুন কিছু উপহার দিয়েছে এমন বলা যাবে না। যদিও সিরিজের কিছু চরিত্র আকর্ষণীয়, প্লটের গভীরতা এবং ডিটেইলিংয়ের অভাব দর্শকদের হতাশ করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের পটভূমিতে তৈরি এই সিরিজে বাঙালি অভিনেতাদের উপস্থিতি থাকলেও ভাষার ক্ষেত্রে বাঙালিয়ানা প্রায় অনুপস্থিত। সিরিজের মূল আকর্ষণ অবশ্যই এর অভিনয়শিল্পীরা, বিশেষ করে ঋত্বিক ভৌমিক, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় নজর কেড়েছে।

গ্যাংস্টার বনাম পুলিশ – পুরনো গল্প নতুন মোড়কে
গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এক ভয়ঙ্কর গ্যাংস্টার বাঘা (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়), যার রাজনীতির সঙ্গে গভীর যোগসাজশ। পুলিশের কাছে সে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক সাহসী সুপারকপ যখন তাকে থামানোর চেষ্টা করে, তখন নিজেই চক্রান্তের শিকার হয়ে পড়েন। এরপর দায়িত্ব নেয় এক নতুন অফিসার, অর্জুন মৈত্র (জিত)।

অন্যদিকে, বাঘার গ্যাংয়ের মধ্যেই ফাটল ধরে। দুই সহযোগী—একজন বুদ্ধিমান মাস্টারমাইন্ড (ঋত্বিক ভৌমিক) এবং অন্যজন আগ্রাসী ও মারকুটে (আদিল জাফর খান)—নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর লড়াইয়ে নামে। একসময় তাদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই কাহিনিতে পুলিশের ভেতরকার রাজনীতি, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং গোপন চক্রান্তের দিকটিও উঠে এসেছে। যদিও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রের প্লটটি আরও গভীরভাবে তুলে ধরা যেত, তা কিছুটা হালকাভাবে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।

কেন সিরিজটি মন ভরাতে ব্যর্থ?

১. গল্পের বুনন দুর্বল
গ্যাংস্টার-ড্রামায় নতুনত্ব না থাকলেও, শক্তিশালী চিত্রনাট্য এবং চরিত্র নির্মাণ থাকলে সিরিজটি জমে উঠতে পারত। কিন্তু এখানেই ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ পিছিয়ে পড়েছে। গল্পের প্রথম তিনটি এপিসোড বেশ ধীরগতির এবং তেমন আকর্ষণীয় নয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্লট পয়েন্টও যথেষ্ট ব্যাখ্যা ছাড়াই পেরিয়ে যায়।

২. অপ্রাসঙ্গিক সংলাপ ও ভাষার অভাবনীয় ব্যবহারে সমস্যা
যদিও সিরিজের নামেই ‘বেঙ্গল’ রয়েছে, তবু বাংলার আবহ খুব একটা ফুটিয়ে তোলা হয়নি। বেশিরভাগ চরিত্রই হিন্দিতে কথা বলে, অথচ বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতারা এতে অভিনয় করেছেন। কেউই ধারাবাহিকভাবে বাংলায় দুই লাইন বলতেও দেখা যায়নি, যা অনেক দর্শকের কাছে অস্বস্তিকর লেগেছে।

Advertisement

বিহারী অ্যাকসেন্টের একটি চরিত্র (আদিল জাফর খান) এমনভাবে কথা বলে যে তা অনেক বিহারী দর্শকের কাছেও কৃত্রিম লেগেছে। তাঁর সংলাপের ধরণ অনেকটা রবি কিষেণের অতিরঞ্জিত নকলের মতো শোনায়।

৩. পুলিশের অসংগতিপূর্ণ কার্যকলাপ
সিরিজের পুলিশ অফিসাররা কখনো খুব স্মার্ট, কখনো অবিশ্বাস্যভাবে আনপ্রোফেশনাল। উদাহরণস্বরূপ, পুলিশ যখন এক গ্যাংস্টারকে এয়ারপোর্টে ধরতে যায়, তখন তার মোবাইল ট্র্যাক করার সাধারণ বুদ্ধিটিও তাদের মাথায় আসে না। অথচ আগের দৃশ্যে দেখা যায়, সুপারকপ অবৈধভাবে মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করাচ্ছে। তবু যা ভালো লাগতে পারে!

১. অভিনয় দক্ষতা
সিরিজের প্রাণ হলো ঋত্বিক ভৌমিক, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। শাশ্বতের চরিত্র ‘বাঘা’ বেশ ভয়ঙ্কর এবং তাঁর স্ক্রিন প্রেজেন্স অত্যন্ত শক্তিশালী। প্রসেনজিৎ, একজন ধূর্ত রাজনীতিবিদের ভূমিকায় যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য। ঋত্বিক ভৌমিক আবারও তাঁর দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।

২. শেষের দিকের কিছু টুইস্ট আকর্ষণীয়
শেষদিকে কিছু চমকদার মোড় রয়েছে, বিশেষ করে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের এক চরিত্র যে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তা একদমই প্রত্যাশিত ছিল না।

৩. ভিজ্যুয়াল ও লোকেশন চমৎকার
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন লোকেশন বেশ ভালোভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে গল্পে সেটার প্রতিফলন আরও ভালোভাবে করা যেত।

দেখা উচিত নাকি নয়?
‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ এমন এক সিরিজ, যা গ্যাংস্টার-ড্রামার ফরম্যাট ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য বিনোদন দিতে পারবে। তবে যারা নতুন কিছু খুঁজছেন, তাঁদের জন্য এটি হতাশাজনক হতে পারে।

এই সিরিজ মূলত পুরনো কন্টেন্টকে নতুন মোড়কে উপস্থাপন করার চেষ্টা। যদিও কিছু চরিত্র এবং চিত্রনাট্যের কিছু অংশ আকর্ষণীয়, তবুও এটি বিশেষ কিছু মনে দাগ কাটতে পারবে না। একবার দেখার মতো হলেও, ‘মাস্ট ওয়াচ’ বলা যাবে না।

 

POST A COMMENT
Advertisement