প্রয়াত বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে পরিচিত বিখ্যাত ইতালীয় অভিনেত্রী জিনা লোলোব্রিজিদা। গত ১৬ জানুয়ারি ৯৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে পুরো হলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। লোলো একজন অভিনেত্রীর পাশাপাশি বিখ্যাত ফটোজার্নালিস্ট এবং নেত্রীও ছিলেন। তাঁর জান্য পাগল ছিলেন অনেক সেলিব্রিটি। চলুন জেনে নেওয়া যাক তাঁর জীবনের কিছু কাহিনি।
ইতালীয় অভিনেত্রী জিনা ললোব্রিজিদা ৫০ এবং ৬০ এর দশকে ইউরোপীয় সিনেমায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁর কর্মজীবন শুরু করে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, Lollobrigida-র একটি বিশেষ ভারতীয় সংযোগ ছিল। কারিশমা কাপুরের ডাক নাম লোলো তাঁরই নামানুসারে রাখা হয়। জিনাকে বিংশ শতাব্দীর মোনালিসা বলা হয়।
লোলো শেষ পাঁচজন আন্তর্জাতিক অভিনেতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন যাঁরা হলিউড সিনেমার স্বর্ণযুগের অংশ ছিল। তিনি ৫০ এবং ৬০-এর দশকে ইউরোপীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম বড় তারকা ছিলেন। ফিল্ম জগতের সঙ্গে জিনা লোলোব্রিজিদার কোনও সংযোগ ছিল না, তবুও তিনি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। জিনার বাবা-মায়ের আসবাবপত্রের কাজ ছিল। কিন্তু পারিবারিক ব্যবসায় যোগ না দিয়ে শোবিজের জগতে পা রাখার সিদ্ধান্ত নেন ললোব্রিগিদা। বোল্ড কায়দায় হয়ে উঠেছিলেন সেক্স সিম্বল। তাঁকে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরীও বলা হতো।
লোলো অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি প্রায়শই তাঁর সাক্ষাৎকারে বলতেন যে তিনি নিজে থেকে কোনও প্রোজেক্টে যাননি। কখনও অডিশনে যাননি। মোটা অঙ্কের টাকার কথা বলে অফার ফিরিয়ে দিলেও প্রোযোজকরা রাজি হয়ে যেতেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি জিনা একজন ফটোগ্রাফার এবং নেত্রীও ছিলেন। জিনা ললোব্রিজিদা হলিউড তারকা রক হাডসন, ব্ল্যাক ঈগল, ম্যাড অ্যাবাউট অপরাহ, 'অ্যালার্ম বেলস', 'এ টেল অফ ফাইভ সিটিস'-সহ অনেকগুলি ছবিতে কাজ করেছেন। 'কাম সেপ্টেম্বর' গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডেও ভূষিত হয়। কিন্তু কিছু সময় পর জিনা ললোব্রিজিদার ক্যারিয়ার ডুবতে থাকে। তারপরে তিনি একজন ফটোজার্নালিস্ট হয়েছিলেন এবং তাতেও প্রচুর খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এরপর তিনি রাজনৈতিক দলে যোগ দেন।
জিনা ললোব্রিজিদা যৌন নির্যাতনেরও শিকার হয়েছিলেন। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯ বছর বয়সে তিনি প্রথমবার যৌন নির্যাতনের শিকার হন। তখন তিনি স্কুলে। এরপর চলচ্চিত্রে কাজ করার সময় দ্বিতীয়বার যৌন নির্যাতনের শিকার হন তিনি। কিন্তু লোলো এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে রাজি ছিলেন না। লোলো এ বিষয়ে বেশি কথা বলতে রাজি হননি।
লোলো প্রায় ৪৫ মিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ৩,৬৮১ কোটি টাকার সম্পত্তি রেখে গেছেন। লোলো তার ছেলের সঙ্গেও শেষ মুহূর্তে আইনি লড়াইতে জড়িয়ে পড়েন। সম্পত্তি পাওয়ার জন্য জিনার ছেলে মিলকো তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।