'লতা মঙ্গেশকর' (Lata Mangeshkar) তাঁর নামটাই যথেষ্ট। বলা হয় প্রত্যেক সফল মানুষের পিছনে কিছু এমন গল্প থাকে, যা অজানাই থেকে যায়। লতা মঙ্গেশকরের জীবনেও এমন অনেক অজানা গল্প আছে। তিনি জীবনে অনেক কিছু পেয়েছেন, আবার অনেক কিছু হারিয়েছেন।
সঙ্গীত জগতে লতা ছিলেন একজন শ্রদ্ধেয় ও সম্মানিত গায়িকা। তাঁর জীবন সম্পর্কিত প্রতিটি ছোট-বড় বিষয় সম্পর্কে সকলেরই উচিত। লতা মঙ্গেশকরের জীবন সম্পর্কিত সেই সব গল্প, যা কেউ জানে না। লতা ইন্দোরে ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম ছিল হেমা। পরে তাঁর বাবা দীননাথ, 'ভববন্ধন' নাটকের একটি নারী চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মেয়ের নাম রাখেন 'লতা মঙ্গেশকর'।
ছোটবেলা থেকেই বাড়ির দায়িত্বশীল মেয়ে ছিলেন লতা মঙ্গেশকর। সঙ্গীত ও নাটক তো তাঁর রক্তে। তাঁর বয়স তখন মাত্র পাঁচ বছর, যখন তিনি তাঁর বাবা দীনানাথের সঙ্গে সঙ্গীত নাটকে অভিনয় শুরু করেন। এছাড়াও তিনি তাঁর দিদিমার কাছে লোকগানের তালিম নেন।
জানলে অবাক হবেন যে, লতা মাত্র একদিনই স্কুলে গিয়েছিলেন পড়াশোনার জন্য। জানা যায়, লতা মঙ্গেশকর স্কুলে বাচ্চাদের গান শেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্কুলের শিক্ষিকা তাঁর এই কাজটি পছন্দ করেননি এবং তাঁকে যা করতে চান তা করতে দেওয়া হয়নি। সেই কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। আবার এও বলা হয় যে লতা মঙ্গেশকর একই সঙ্গে তাঁর ছোট বোন আশা ভোঁসলেকে স্কুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা হয়নি। যে কারণে তিনি স্কুল ছেড়ে দেন।
১৯৪২ সালে পিতা দীননাথের মৃত্যুর পর লতা মঙ্গেশকরের জীবনে দুঃখের পাহাড় ভেঙে পড়ে। ১৩ বছর বয়সে, যে সময় হেসে খেলে কাটানোর সময়, সে সময় পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়েছিল তাঁর ওপর। সে সময় থেকেই গান ও অভিনয়ে কেরিয়ার গড়তে শুরু করেন।
১৯৪৫ সালে, মাস্টার বিনায়ক লতা মঙ্গেশকরকে 'বড়ি মা' ছবিতে একটি ছোট ভূমিকার প্রস্তাব দেন। কিন্তু লতাজি গান গাইতে বেশি আগ্রহী ছিলেন, তাই তিনি একই বছর ওস্তাদ আমান আলি খানের কাছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখতে শুরু করেন।
অনেকেই বলেন, কখনও কখনও প্রত্যাখ্যান জীবনে সুখ নিয়ে আসে। লতা মঙ্গেশকরের জীবনে এমন অনেক ঘটনা ছিল যখন তার কণ্ঠ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। কিন্তু লতা মা সরস্বতীর আশীর্বাদ সবসময় তাঁর সঙ্গে ছিল। ১৯৫৯ সালে, কিংবদন্তি গায়িকা মহল চলচ্চিত্রের 'আয়েগা আনাওয়ালা' গানে তাঁর কণ্ঠ দেন। তাঁর কণ্ঠে মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছেন সকলেই।